সামনেই দেশের লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্কলহ। বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারকে তালাবন্দি করে রাখা থেকে দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ— লোকসভা নির্বাচন যত এগোচ্ছে ততই এমন সব ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের। এবার রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে আরও বড়সড় বিক্ষোভের পথে যেতে চলেছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধরা। জানা গিয়েছে, রাজ্য দপ্তরের সামনে লাগাতার ধরনা কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে এই বিক্ষোভ হবে। আর এমন দিনে এই কর্মসূচি হওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যেদিন রাজ্যে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ।
সূত্রের খবর, ৩১ অক্টোবর কলকাতায় আসার কথা সন্তোষের। সংগঠনের অবস্থা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারপর আরও একাধিক বৈঠক আছে। ওইদিনই বিক্ষোভ ও ধরনা কর্মসূচি নিতে পারে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ। দলীয় সূত্রে এমনই খবর। প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিজেপির মধ্যে এই মুহূর্তে কোন্দল চরমে। প্রবীণ নেতারা দলের এই অবস্থা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, দলের অবস্থা এখন হারতে হারতে হারাধন। আবার কোতুলপুরের বিজেপি বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানের পর টুইটে দলকে নিশানা করে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায় বলেছেন, ‘বঙ্গ বিজেপিতে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না। বিজেপির অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের নোংরা পরিণতি। অবিলম্বে বিজেপিতে আদর্শগত ও সাংগঠনিক সংস্কার প্রয়োজন। লোকসভা ভোটের আর ৬ মাস বাকি, সতর্ক হোন।’ টুইটে অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডাকে ট্যাগ করেছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে ৩১ অক্টোবর কলকাতায় আসার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা বি এল সন্তোষের। দলের সংগঠন নিয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। সন্তোষ কলকাতায় এলে সেই দিনই রাজ্যের সহপর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, রাজ্যের সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়দের বিরুদ্ধে জোরদার বিক্ষোভে শামিল হতে পারেন দলের বিক্ষুব্ধরা। এদিকে, বিক্ষুব্ধদের ঠান্ডা করতে দলীয়স্তরে বহিষ্কার থেকে শো-কজ শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বকে পরামর্শ দিয়েছিলেন পুরনোদের কথা শুনে তাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য। কিন্তু তা না শুনে শাস্তির পথেই হাঁটছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। কিন্তু কড়া পদক্ষেপ নিয়েও ফল উল্টো হচ্ছে। ক্ষোভ আরও দানা বাঁধছে। পুরো বিষয়টিতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় এসে বিক্ষুব্ধদের ঠান্ডা করতে রাজ্য নেতাদের কী পরামর্শ দেন সন্তোষ সেদিকে নজর রয়েছে দলের একাংশের।