একুশের ভোটযুদ্ধে ভরাডুবির পর থেকেই শনির দশা শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপির। দলত্যাগের হিড়িক, গোষ্ঠীকোন্দল তো ছিলই। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বেহাল দশা সংগঠনেরও। অবস্থা এমনই যে যত দিন যাচ্ছে কমছে বিধায়ক সংখ্যাও। একুশের ভোটে ৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ক’দিন পরেই দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচনে হার হয় তাদের। ফলে বিধায়ক সংখ্যা হয় ৭৫। কিছু দিনের মধ্যেই মুকুল রায়কে দিয়ে শুরু হয় ‘ক্ষয়’। যার সর্বশেষ উদাহরণ বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহারের তৃণমূলে যোগদান। কিছু দিন আগেই উপনির্বাচনে হারাতে হয়েছে ধূপগুড়ি আসন। যার ফলে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে ৬৭।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের পর থেকেই বিজেপিতে ক্ষয়ের ধারা অব্যহত। দুই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং অর্জুন সিংহ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। অর্জুন খাতায়কলমে বিজেপিতে থাকলেও বাবুল এখন বিধানসভা ভোটে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী। আসানসোল তৃণমূলের দখলে। ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল ও ব্যারাকপুর নিয়ে তো চিন্তা রয়েছেই। সেই সঙ্গে বিষ্ণুপুর লোকসভা আসন নিয়েও চিন্তা বাড়িয়ে দিলেন বিধায়ক হরকালী। ইতিমধ্যেই এই আসনের দুই বিধায়ক তৃণমূলে গিয়েছেন। মুকুলের পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। এঁরা সকলেই আগে তৃণমূলে ছিলেন।
কিন্তু আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিজেপির ‘বিড়ম্বনা’ বেড়েছে। কারণ, সুমন আদতে বিজেপি। প্রথম থেকেই তিনি পদ্মশিবিরে। যেমনটা হরকালীও। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের ‘পরিচিত’ হিসাবে ২০১৮ সালে বিজেপিতে যোগ দেন হরকালী। জেলার নেতারা বলেন, বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু সৌমিত্র খাঁ বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তাঁকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়। পরে ২০২১ সালে ওই লোকসভারই অন্তর্গত কোতুলপুর থেকে প্রার্থী করা হয়। বৃহস্পতিবার শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকরে হাত থেকে তৃণমূলের উত্তরীয় গলায় পরেছেন হরকালী।