গুলির আওয়াজে ফের কেঁপে উঠল ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। গতকাল, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে ফের একবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলেছে বিএসএফ। জম্মু ও কাশ্মীরের আর্নিয়া এবং সুচেতগড় সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাঁচটি ভারতীয় সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে, বিনা উস্কানিতে গোলাগুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা। এমনটাই জানিয়েছে বিএসএফ। রাতভর গোলাগুলিতে বিএসএফের দুই জওয়ান এবং একজন অসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাঁদের সকলেরই অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। বিএসএফ জানিয়েছে, রাত ৮টা নাগাদ আর্নিয়া সেক্টরে আচমকা গোলাগুলি ছোড়া শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনা। বিনা উস্কানিতে গুলি ছোড়ার পর, উপযুক্ত জবাব দেয় বিএসএফও। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক বিএসএফ কর্তা জানিয়েছেন, চার থেকে পাঁচটি ঘাঁটি জুড়ে দুই পক্ষে রাতভর গোলাগুলি চলে। আহত জওয়ানদের প্রথমে সেনা হামসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের জম্মুর জিএমসি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বিএসএফের গুলিতে পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটির কতটা ক্ষতি হয়েছে, রাতের অন্ধকারে তা অবশ্য বোঝা যায়নি। বিএসএফের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে শুক্রবার।
এবিষয়ে পিটিআইয়ের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করেই নয়, সীমান্তবর্তী অসামরিক এলাকাগুলিতেও মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা। আর্নিয়া, সুচেতগড়, সিয়া, জাবোয়াল এবং ত্রেভা এলাকায় মুহূর্মুহূ গোলা বর্ষণ হয়েছে। একটা সময়, পাকিস্তানি গোলাগুলির ভয়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি। সম্প্রতি, উপত্যকায় শান্তি বিরাজ করছিল। ঘরছাড়া মানুষদের অনেকেই গ্রামে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের গোলাগুলি ছোড়া শুরু হওয়ায়, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আর্নিয়া এবং জাবোয়াল এলাকার বাসিন্দারা, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই বসতবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন। গত ১০ দিনের মধ্যে, এই নিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় দ্বিতীয়বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। এর আগে ১৭ অক্টোবর, বিনা উস্কানিতে বিএসএফ-এর সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল পাক রেঞ্জার্সরা। দুই বিএসএফ সদস্য আহত হয়েছিলেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পর, সীমান্ত এলাকা আপেক্ষিকভাবে শান্তই ছিল। যদিও, পাকিস্তানের দিক থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা সমানে চলেছে। ড্রোন ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য অস্ত্র পাঠানোর বেশ কয়েকটি ঘটনাও সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবারও, কুপওয়ারা জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে মছিল সেক্টরে জঙ্গিদর অনুরপ্রবেশের একটি চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। দুই পক্ষের সংঘর্ষে মোট প্রাণ হারিয়েছে মোট পাঁচ জন সন্ত্রাসবাদী।