বৃহস্পতিবার এক আলাপচারিতায় তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের নতুন প্রজন্মের উচিত সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। তবেই দেশে কর্মসংস্কৃতির পরিবেশের উন্নতি ঘটবে।’ আর তা নিয়েই এবার চরম সমালোচনার মুখে পড়লেন ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এনআর নারায়ণ মূর্তি। তাঁর পরামর্শকে নিতান্তই পুঁজিবাদী মানসিকতা বলে তুলোধনা করল তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস।
ইনফোসিস কর্তার এই পরামর্শ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নারায়ণ মূর্তিকে নিশানা করে রাজ্যসভায় তৃণমূলের ডেপুটি লিডার সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘উনি হলেন ক্রোনি ক্যাপিটালিস্টের প্রতিভূ। যে তত্ত্ব উনি খাড়া করতে চাইছেন তাকে বলা যেতে পারে আধুনিক দাসপ্রথা। কর্পোরেট সংস্থায় ইতিমধ্যে এই ধরনের শোষণ চলছে। মুনাফা কামাতে ওঁরা আরও শোষণের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে চাইছেন।’ তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকার এই সব পুঁজিপতিদের হাতে তামাক খাচ্ছে। দেশে শ্রম আইন লঘুতর করতে চেষ্টার কসুর করছে না। আসলে এই সব পুঁজিপতিরা যেরকম বলছেন, সরকার সেরকম নীতি তৈরি করছে। তাতে শোষণের রাস্তা আরও প্রশস্ত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়েই নারায়ণ মূর্তির সমালোচনা করেছে বামেরা। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘এটা একেবারেই পুঁজিবাদী মানসিকতা। যখন কম্পিউটার ও ইন্টারনেট চালু হয়, তখন ওঁরা বলেছিলেন এতে কাজ সহজ হবে। কম সময়ে বেশি কাজ করা যাবে। হল তার উল্টোটা।’ তাঁর দাবি, ‘একজন মানুষকে দিয়ে সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করিয়ে নেওয়ার অর্থ পুঁজি ও শ্রমের অনুপাত তথা ভারসাম্যকে আরও ঘেঁটে দেওয়া। এর ফলে বেকারত্ব বাড়বে।’ আবার কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যর কটাক্ষ, ‘নারায়ণ মূর্তি কি জানেন যে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে গেলে শরীর থেকে কত ক্যালোরি বের হয়, আর কত ক্যালোরি তার জন্য অর্জন করতে হয়?’ তিনি বলেন, ‘আমি ওঁকে অনুরোধ করব একবার কোনও জুটমিলে এসে ম্যানিং করুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন ওঁর কথা কতটা হাস্যকর ও কাণ্ডজ্ঞানহীন।’