বাংলার রাজ্যপাল হয়ে আসার পর প্রথম কিছুদিন রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু সেসব এখন অতীত। সাম্প্রতিক কালে বারবারই রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একদিকে যেমব শিক্ষা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা— নবান্ন তথা রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করেছে রাজভবন। তেমনি আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাম না-করে রাজ্যপালকে বিঁধেছেন। তবে এবার যুধুধান সেই দুই শিবিরকে ‘এক’ করে দিলেন মা দুর্গা। যেখানে নবান্ন এবং রাজভবনের বিচারে কলকাতার একটি পুজো সেরার শিরোপা পেয়েছে। পুরস্কৃত হয়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজভবন— উভয়পক্ষেরই বিচারে। দুই প্রতিষ্ঠানের বিচারেই পুরস্কৃত হয়েছে উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয়ের পুজো। পুজোপ্রেমীদের একাংশের মতে, কোনও সংঘাতে না গিয়ে উৎকর্ষের বিচারে সহমত পোষণ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং রাজ্যপাল আনন্দ উভয়েই বিরল ঐক্য দেখিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরের মতো এবারও ‘টালা প্রত্যয়’-এ থিম শিল্পী ছিলেন সুশান্ত পাল। থিমের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘কহন’। লোহার প্রসাদে অপরূপ সব কারুকার্য। সন্ধ্যা নামতেই সেই প্রসাদে আলো-ছায়ার অদ্ভুত খেলা। এমন মণ্ডপসজ্জায় কলকাতার পুজোর অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল ওই পুজো। আমজনতার ভিড় এবং দরাজ প্রশংসা তো বটেই, ওই পুজোকে পুরস্কৃত করেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনও। ঘটনাচক্রে, নবান্ন এবং রাজভবন— উভয়েরই বিচারে পুরস্কৃত হয়েছে পুজোটি। বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান বিভাগে নবান্নের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদল বিভিন্ন পুজো ঘুরে ঘুরে দেখে তাদের পুরস্কৃত করে। যেই প্রতিনিধিদলকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিদল বলেই মনে করা হয়ে থাকে। দেবীপক্ষেই নবান্ন তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ‘টালা প্রত্যয়’কে ‘সেরার সেরা’ পুজোর তালিকায় স্থান দিয়েছিল। আর বিজয় দশমীর দিন যে সেরা চারটি পুজোকে রাজভবন ‘শ্রেষ্ঠ পুজো’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাতে নাম রয়েছে টালা প্রত্যয়েরই।