বন্ধুত্বের অনন্য দৃষ্টান্তের সাক্ষী রইল বাঁকুড়ার পুইপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই স্কুলের এক পড়ুয়া দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত, এই খবর পেতেই নিজেদের জমানো অর্থ সাহায্য বন্ধুর তুলে হাতে তুলে দিল স্কুলের পড়ুয়ারা। একেবারে প্রান্তিক পরিবারের সদস্য জড়িষ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র কুষাণ। জটিল দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত সে। ব্যায়বহুল ওই চিকিৎসা করানো কুষাণের পরিবারের পক্ষ থেকে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে এই খবর শুনেই সারা বছর পুজোর জন্য জমা টাকা কুষানের চিকিৎসার জন্য তুলে দিল পুইপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা।বছর আটেকের কুষাণ সেন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় একবার অস্ত্রোপচার হলেও সফল হয়নি। বর্তমানে সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা কুষাণ এর ব্যায়বহুল চিকিৎসা করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে তার পরিবারের পক্ষে।
এমন পরিস্থিতিতে সিমলাপাল ব্লক প্রাইমারি টিচার্স কমিউনিটি ও এলাকার মানুষের আর্থিক সহায়তায় অতি সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে ফের কুষাণের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। পুইপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক করালীকান্ত সৎপতি বলেন, “আমাদের কাছ থেকে জড়িষ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র কুষাণের খবর শুনেই ওরা প্রত্যেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছে।” বিষয়টি যথেষ্ট প্রশংসনীয় বলে তিনি জানান। জড়িষ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঝন্টু মান্না এপ্রসঙ্গে বলেন, পুইপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা যথেষ্ট মানবিক, তাদের এই কর্মকাণ্ড সে কথা প্রমাণ করে। শিশু শিক্ষার্থীদের এই অভাবনীয় উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সিমলাপাল চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক আসিফ ইকবাল। “অনেক সময় শিশুরাও বড়দের পথ দেখায়, আর পুইপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা সেই জিনিসটাই করে দেখালো। আমি খুবই খুশি। এভাবে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেকেই এগিয়ে এলে ছোট্ট কুষাণ খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে”, জানান তিনি।