আটে আট করলেন রোহিত শর্মারা। শনিবার চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত। আর এই নিয়ে ওডিআই বিশ্বকাপ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের ধারাও অব্যাহত রাখল টিম ইন্ডিয়া। বিগত ১৯৯২ সালে মেলবোর্নে প্রথম বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাক। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪৩ রানে হারায় ভারত। এরপর ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০১১, ২০১৫, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলিতেও সেই ফলাফলেরই পুনরাবৃত্তি ঘটে। একবারও ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। আর শনিবার আহমেদাবাদেও তার অন্যথা হল না। ভারতের সামনে কার্যত নাস্তানাবুদ হলেন বাবর আজমরা। পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয় ১৯১ রানে। ৩০.৩ ওভারেই মাত্র ৩ উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এই রান তৃতীয় নিম্নতম। জয়ের জন্য সহজ লক্ষ্যমাত্রা পেয়ে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করে ভারত। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে প্রথম বলেই চার মারেন অধিনায়ক রোহিত। একইভাবে নিজের ইনিংস শুরু করেন বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে নামা শুভমন গিলও। বড় রান না পেলেও তাঁর ১১ বলে ১৬ রানের ইনিংসে ছিল যথেষ্ট সাবলীলত্ব। শাহিন তাঁকে দ্রুত আউট করলেও পাকিস্তানের সুবিধা হয়নি কিছু। উইকেটের অন্য প্রান্তে রোহিত এদিনও আফগানিস্তান ম্যাচের মেজাজেই ছিলেন। ৬৩ বলে ৮৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেললেন তিনি। এ দিন অবশ্য সেভাবে রান এল না বিরাট কোহলির (১৬) ব্যাটেও। তবে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করলেন শ্রেয়স আয়ার। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। শ্রেয়স খেললেন ৬২ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ২টি ছয়। শেষ বেলায় সঙ্গে পেলেন লোকেশ রাহুলকে। শেষ পর্যন্ত ১৮ রান করে অপরাজিত থাকলেন রাহুল।
শনিবার টসে জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করার আহ্বান জানান রোহিত। বাবরের দল ইনিংসের শুরুটা খারাপ করেনি। কিন্তু শেষটা ছিল করুণ। ৩৬ রানে শেষ ৮ উইকেট হারালেন তাঁরা। বাবর এবং মহম্মদ রিজওয়ান মিলে করলেন ৯৯ রান। পাকিস্তানের বাকি ন’জন ব্যাটারের অবদান ৯২ রান। দুই ওপেনার আবদুল্লা শফিক (২০) এবং ইমাম উল হক (৩৬) ধরে শুরু করার পর আগ্রাসী মেজাজে খেললেন। তবে কেউই বড় রান তুলতে পারলেন না। দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর অধিনায়ক বাবর দলের হাল ধরেন রিজ়ওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে। দু’জনের জুটি ধারাবাহিক ভাবে প্রতি ওভারে রান তুলে পাক ইনিংস গড়ার কাজে মন দেয়। কিন্তু ৭টি চারের সাহায্যে ৫০ রান করার পরেই মনসংযোগ হারান পাক অধিনায়ক। সিরাজের বলে তিনি আউট হওয়ার পর কার্যত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল পাকিস্তানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে ৮৩ রানের জুটি ভাঙার পর পরই যশপ্রীত বুমরার দুরন্ত অফকাটারে আউট হলেন রিজওয়ান। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করতে পারলেন না। ৭টি চারের সাহায্যে তিনি করলেন ৪৯ রান। পাকিস্তানের বাকি ব্যাটারেরা কার্যত ২২ গজে এলেন এবং সাজঘরে ফিরলেন। সাউদ শাকিল (৬), ইফতিকার আহমেদ (৪), শাদাব খান (২), মহম্মদ নওয়াজ় (৪), হাসান আলি (১২), হ্যারিস রউফদের (২) কেউ উইকেটে দাঁড়ানোর চেষ্টাই করলেন না। এর সুফল পেলেন ভারতীয় বোলারেরা। পাকিস্তানের উইকেটগুলি সবাই মিলে ভাগাভাগি করে নিয়ে নিলেন তাঁরা। ভারতের সফলতম বোলার বুমরা ১৯ রানে ২ উইকেট নিলেন। ভাল বল করলেন কুলদীপ যাদবও। ৩৫ রানে ২ উইকেট তাঁর। সিরাজ ২ উইকেট পেলেন ৫০ রান খরচ করে। হার্দিক পাণ্ডিয়া ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। ৩৮ রানের বিনিয়ম ২ উইকেট রবীন্দ্র জাদেজা। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বুমরাকে। আগামী ১৯শে অক্টোবর পুনেতে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারত।