আসন্ন নির্বাচনের প্রাক-লগ্নে ফের আভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। আদি নেতাদের উপেক্ষা করে নব্য এবং দলবদলু নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেবার যে অভিযোগ উঠেছে বারবার। কদিন ধরেই এই সংক্রান্ত নানা বিষয়ে বাংলার জেলায় জেলায় বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের অসন্তোষ যেন বেড়েই চলেছে। গত বৃহস্পতিবার এর আঁচ এসে পড়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের মুরলীধর লেনের দলীয় কার্যালয়ে। এদিন বঙ্গবিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী সহ রাজ্য নেতৃত্বের অপসারণ চেয়ে তীব্র ক্ষোভ আছড়ে পড়েছিল দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে বিক্ষুব্ধদের সুকান্ত মজুমদারের ছবি মাটিতে ফেলে লাথি মারতেও দেখা যায়। তবে রাজ্য সভাপতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এই কাজে জড়িত কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সূত্রেই নাকি এবার বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন ও বর্তমান সভাপতির মতবিরোধ চূড়ান্ত আকার নিয়েছে। সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত শুক্রবার খড়গপুরে এক চা-চক্রে যোগ দিয়ে দিলীপ বলেন যে, আগে কোনওদিন তাঁদের দলে এমন ঘটনা ঘটেনি। যাঁদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছে, তাঁদের নিয়েই কথা বলা উচিত। সবাইকে সাজা দিয়ে ঠাণ্ডা করা যাবে না। শাস্তির ভয় দেখিয়ে সমাজ চলে না। বিক্ষুব্ধরাও তাঁদের পরিবারের সদস্য। ২০২১ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর মেয়াদ ফুরনোর অনেক আগে তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আনা হয় বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। তারপরই রাজ্য ও জেলাস্তরে বিভিন্ন কমিটি থেকে দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের ছাঁটাই শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, আদিদের বসিয়ে নব্য এবং দলবদলু নেতারাই এখন দলের নয়নমণি। সেই ধারাই এখনও অব্যাহত বঙ্গ বিজেপিতে। এই ইস্যুতে রাজ্যের দুই শীর্ষনেতা যেভাবে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে প্রবলতর অস্বস্তিতে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।