গত শনিবার ইজরায়েলের বুকে ভয়ঙ্কর আঘাত হানে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। গাজা থেকে মিনিট কুড়ির মধ্যে ছোড়া হয় ৫ হাজার রকেট। এর পরই জঙ্গি গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইজরায়েল সরকার। পালটা হামলা করে তারা। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইজরায়েলের পাশে থাকার কথা জানান। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে তিনি জানান, এই লড়াইয়ে ভারত পুরোপুরি ইজরায়েলের পাশে আছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে মোদীর ফোনে কথাও হয়। একাধিক বিশ্ব নেতার সঙ্গে কথা বলার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হুমকি দেন, গাজা ভূখণ্ড বিশ্ব মানচিত্র থেকেই মুছে দেবেন তাঁরা। সাড়ে তিন লাখ ইজরায়েলি পদাতিক সেনা গাজার প্রবেশের মুখে চূড়ান্ত নির্দেশ অপেক্ষায়।
কিন্তু সরকারিভাবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, প্যালেস্তাইন নিয়ে নয়াদিল্লির অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। ভারত একটি স্বাধীন, সবল প্যালেস্তাইনের পক্ষে। পরারাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র অরবিন্দম বাগচি বলেন, ‘ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাতে ভারতের নীতি দীর্ঘস্থায়ী এবং ধারাবাহিক। ভারত সর্বদাই ইসরায়েলের পাশাপাশি নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে বসবাসকারী একটি সার্বভৌম, স্বাধীন এবং কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে। এজন্য যুদ্ধ থামিয়ে পুনরায় সরাসরি আলোচনা শুরু করার পক্ষে ভারত।’ ৫ দিন আগে মোদীর বক্তব্য অবশ্য ছিল ভিন্ন। তিনি সরাসরি ইজরায়েলকে সমর্থনের কথা বলেছিলেন। বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য বিতর্ক না বাড়িয়ে মোদীর কথার ব্যাখ্যা দিয়েছে। বাগচির সাফাই, প্রধানমন্ত্রী আসলে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করেছিলেন। সেই অবস্থান থেকে ভারত সরেনি।
যদিও বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে বিজেপি আক্রমণের মুখে পড়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ মনে করছেন, ৫ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটে মেরুকরণের লক্ষ্যে তিনি তড়িঘড়ি হামাসের হামলার তীব্র নিন্দা করে বসেন। এদিকে, গত সোমবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি তাদের বিবৃতিতে প্যালেস্তাইন প্রশ্নে ভারতের বিদেশনীতি মেনেই যুদ্ধ থামানোর কথা বলে। সেই সঙ্গে প্যালেস্তাইনের প্রতি সমর্থনও জানিয়ে দেয়। যা নিয়ে গত তিনদিন ধরে বিজেপি-সহ গেরুয়া শিবির কংগ্রেসকে লাগাতার আক্রমণ করেছে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগে। কয়েক কদম এগিয়ে আসামের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরাসরি কংগ্রেসকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু তাল কেটেছে বিদেশ মন্ত্রকের সরকারি প্রতিক্রিয়ায়। কংগ্রেসের বিবৃতির সঙ্গে সরকারি অবস্থানের কোনও ফারাক রইল না।