মোদী-জমনায় ফের গণতন্ত্রের উপর নেমে আসতে চলেছে রাষ্ট্রীয় কোপ? দেখা দিয়েছে তেমনই সম্ভাবনা। এর আগে নোটবন্দি বা নাগরিকত্ব আইন সংশোধন, দুই ইস্যুতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সবার আগে মুখ খুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমান ফৌজদারি দণ্ডবিধি সংশোধন করে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বাস্তবায়িত করতে চাইছে কেন্দ্র নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। ওই প্রস্তাবিত আইনের ধারা নিয়ে বুধবার তীব্র আপত্তি জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তৈরি করা খসড়া পড়ছিলাম। আমি দেখে অবাক যে ভয়ানক কঠোর ব্যবস্থার প্রস্তাব করা হয়েছে ওই খসড়ায়। যা জনবিরোধী।” পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগে দেশে দেশদ্রোহিতার আইন ছিল এখন তা প্রত্যাহারের নামে যেসব ধারা ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ঢোকানো হয়েছে তা ভয়ঙ্কর এবং খামখেয়ালি।” এতে সাধারণ মানুষের আরও বিপদ হতে পারে বলেই আশঙ্কা মমতার।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নতুন আইন নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্তরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া শুরু করেছেন। বিজেপির বক্তব্য, বর্তমানে যে আইন রয়েছে তাতে ঔপনিবেশিকতার ছাপ স্পষ্ট। তা দূর করা দরকার। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বর্তমান আইনকে ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা শুধু ওপর ওপর করলেই হবে না, অন্তর থেকেও করতে হবে। আমি সমস্ত আইনজ্ঞ এবং জনআন্দোলনের কর্মীদের এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তৃণমূল সাংসদরাও এ ব্যাপারে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য জানাবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতার এই বক্তব্যেই স্পষ্ট, কেন্দ্র যে খসড়া তৈরি করেছে তার পরিবর্তন না করলে তৃণমূল সংসদে সমর্থন জানাবে না। বরং, ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে এই বিলের বিরোধিতার জন্য ঐক্যমত গড়ে তোলার চেষ্টা চালাতে পারে। “অভিজ্ঞতা দিয়ে আইনের সংশোধন করতে হবে। কিন্তু ঔপনিবেশিক স্বৈরাচারের মাধ্যমে পিছনের দরজা দিয়ে দিল্লীতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না”, বক্তব্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর।