অন্তর্দ্বন্দ্ব পিছু ছাড়ছে না বঙ্গ বিজেপির। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্রমশই চরম আকার ধারণ করছে পদ্মশিবিরের গোষ্ঠিকোন্দল। এবাদ বারাসত সাংগঠনিক জেলার কোন্দলের গুরুতর প্রভাব পড়ল বিজেপির সল্টলেকের অফিসে। বুধবার বিকেলে কার্যত তোলপাড় হল সল্টলেক অফিসে। রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ ও ক্ষোভ উগরে দিল বারাসাত সাংগঠনিক জেলার কর্মী-সমর্থকরা। বারাসাত জেলার সভাপতির অপসারণের দাবিতে এদিন দলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা কার্যত তাণ্ডব চালালেন বিজেপি অফিসে। বাঁশ ও ইট দিয়ে মূল ফটকের তালা ভাঙে বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ গেট ও পাঁচিল টপকে অফিস চত্ত্বরে ঢুকে পড়েন। গেটে লাথি মারা থেকে শুরু করে রীতিমতো তান্ডব চলে বিজেপি দফতরে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগরে দেন বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষকে অবিলম্বে পদ থেকে অপসারণের দাবি তোলেন তারা। মারমুখী বিজেপি কর্মীরা অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন। ওখানে থাকা বিজেপি কর্মীরা বাধা দিলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মধ্যে।
এরপর বিক্ষুব্ধদের প্রহারে জখম হন এক বিজেপি কর্মী। কপাল ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে জখম ওই বিজেপি কর্মীর। প্রকাশ্যে বিজেপির এই মারপিট ও কোন্দলের জেরে এদিন ধুন্ধুমার বেঁধে দলের সল্টলেক দফতরে। পার্টি অফিসের মূল ফটক টপকে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা ভিতরে ঢুকে পড়ে। ভয়ে পার্টি অফিসের নিরাপত্তা রক্ষী ও উপস্থিত নেতা কর্মীরা দোতলায় ওঠার কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেয়। রাত পর্যন্ত পার্টি অফিসের সামনে ধরনায় বসে স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষুব্ধরা। কুশপুতুল পোড়ানো হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘‘দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ঠান্ডা ঘরে বসে পার্টি চালাচ্ছেন। গ্রুপবাজি করছেন।’’ বারাসাত থেকে আসা বিজেপি নেতা-কর্মীদের আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, পয়সার বিনিময়ে দলীয় পদ বিলি করছেন অমিতাভবাবু। বর্তমান রাজ্য নেতারা পার্টিকে শেষ করে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। ঘটনা ঘিরে রীতমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে গেরুয়াশিবিরে। মুখে কুলুপ এঁটেছেন শীর্ষ নেতারা। তবে এই ঘটনা যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মাথাব্যথাও বাড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।