বৃহস্পতিবার রাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘নব্যজমিদারি প্রথা’র অভিযোগ ছুড়ে দিয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার তার পাল্টা জবাব দিল তৃণমূলও। রীতিমতো চারটি অনুচ্ছেদে ‘জমিদারি’র ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা। এর পাশাপাশি, তিনটি প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছে তারা।
তৃণমূলের ‘জমিদারি’ তিরে সরাসরি বিদ্ধ করা হয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিকে। ‘জমিদারি’র ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, “দু’বছর ধরে গ্রামের গরিব মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা জমিদারি।” রাজভবন সূত্রে বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের যে জবাব মিলেছিল, তাতে বোস তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘জমিতে বা মাটির কাছাকাছি পৌঁছনো জমিদারি নয়। বরং, জমিতে না নেমে শহরের বিলাসী আস্তানায় বসে কৃষকদের নিয়ন্ত্রণ করা হল নব্যজমিদারি।” শুক্রবার রাজ্যপালের এই মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছে বাংলার শাসকদল। তারা বলেছে, “দিল্লির প্রাসাদে বসে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ নিয়ে ছিনিমিনি খেলাই হচ্ছে জমিদারি।” ঘটনাচক্রে, রাজ্যপাল বোস এখন দিল্লিতেই রয়েছেন।
তৃণমূলের জবাবে উঠে এসেছে কৃষি ভবনের ধর্না এবং সেখান থেকে তৃণমূল নেতা, সাংসদদের ‘জোর করে’ তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও। বলা হয়েছে, ‘দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশি দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে জমিদারি’। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অপব্যবহার’ করে বিরোধী স্বর দমন করার অভিযোগেও বিজেপিকে বিঁধেছে তৃণমূল। চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এক দিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে বিরুদ্ধ স্বরকে দমন করা হচ্ছে, অন্য দিকে মুখোমুখি কথা এড়াতে পিছনের দরজা দিয়ে পালাচ্ছে— একেই বলে জমিদারি’।
রাজ্যপালকে তিনটি প্রশ্ন তুলেও বিদ্ধ করতে চেয়েছে তৃণমূল। এগরায় বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ন’জনের মৃত্যু, বাঁকুড়ায় মাটির দেওয়াল ভেঙে পড়ে তিন শিশুর মৃত্যু এবং আবাস যোজনার ঘর না পেয়ে দুর্যোগ-বিপর্যয়ে বহু মানুষের মৃত্যু— তিনটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এই সব ক্ষেত্রে উদ্বেগ বা বিবেক কোথায় যায়? তৃণমূলের লক্ষ্য এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার হলেও মনে করা হচ্ছে নাম না করে ‘কেন্দ্রের প্রতিনিধি’ রাজ্যপালকেই আক্রমণ করেছে বাংলার শাসকদল।