শারদীয়ার আবহে ভরে উঠেছে আকাশ-বাতাস। আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা। তার পরেই দেবীপক্ষের শুরু। ইতিমধ্যেই সাজো-সাজো রব সারা রাজ্যজুড়ে। শহর থেকে জেলা, দেবীমূর্তি ও মণ্ডপসজ্জার কাজ চলছে জোরকদমে। আসা যাক এক অভিনব পুজোর কথায়। সাধারণভাবে মা দুর্গার পুজোয় বসতে দেখা যায় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের। তবে বাংলার এই গ্রামের রীতিটা অন্যরকম। অসীম ভক্তি ও অপার শ্রদ্ধায় দেবীর আরাধনায় এখানে অনন্য এক রীতি মানা হচ্ছে দশকের পর দশক ধরে। ব্রাহ্মণের উচ্চারিত মন্ত্রে নয়, বিশেষ এই রীতি মেনেই আরাধনা হয় মালদার হবিবপুরের কেন্দপুকুর ডাঙাদিঘি গ্রামের দেবীমূর্তির। এ গ্রামে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের নয়, আদিবাসী সম্প্রদায়ের কারও মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই পূজিত হন দেবী দুর্গা। মালদার আদিবাসী অধ্যুষিত কেন্দপুকুরের ডাঙাদিঘিতে এই দুর্গাপুজোর বয়স দেড়শো পেরিয়েছে। এখানে টিনের একটি ছাউনি ঘরেই পূজিত হন দেবী মহামায়া। সেই ঘরের মধ্যেই রয়েছে দেবী দুর্গার বেদী। নিজস্ব মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন আদিবাসীরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো ডাঙাদিঘি গ্রামের আদিবাসীদের পুজোকে ঘিরে এখন তুঙ্গে তোড়জোড়। নিজেদের সম্প্রদায়ের লোকজনদের কাছ থেকে টাকা তুলে পুজো করেন এগাঁয়ের বাসিন্দারা। উৎসবের দিগুলিতে এলাকার গরিব মানুষদের পাত পেড়ে খাওয়ানো ও তাঁদের নতুন জামাকাপড় বিতরণ করা হয়। এই পুজো কমিটির জনৈক সদস্য বাবুল হাঁসদা জানিয়েছেন, তাঁদের এই পুজোর শুরুটা হয়েছিল বাংলাদেশে। এক সময় এই পুজো ছিল পরিবারকেন্দ্রিক। প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো এই দুর্গা পুজো। পুজোর প্রচলন করেছিলেন লব হাঁসদা। স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি দেবী দুর্গার পুজো শুরু করেছিলেন লব হাঁসদা। তখন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার নাচোলের হাকরোল গ্রামে থাকতেন লব হাসদাঁ। আজও ধুমধাম করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিয়ম মেনে এখানে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। পুজোর চার দিন এখানে পংক্তি ভোজনের আয়োজন থাকে। ব্রাহ্মণ পুরোহিতের বদলে নির্দিষ্ট ধর্মীয় রীতি মেনে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন একজন প্রবীণ আদিবাসী।