চিনের হয়ে প্রচার চালাত সংস্থা। এর জন্য চিন থেকে টাকাও আসত। এমনই অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন সহ একাধিক ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে নিউজক্লিকের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার কর্মিবর্গ বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তী। শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। দিল্লি পুলিশ অসত্য অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে বলে অভিযোগ তুলে তা খারিজ করার জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
ভারতের মানচিত্র থেকে কাশ্মীরকে বাদ দেওয়া এবং অরুণাচল প্রদেশকে বিতর্কিত অঞ্চল হিসেবে দেখানো নিয়ে একটি ইমেল চালাচালিতে প্রবীর যুক্ত ছিলেন বলে দাবি দিল্লি পুলিশের। দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা বিচারক হরদীপ কউর বৃহস্পতিবার এই মামলায় ধৃত প্রবীর এবং অমিতকে পুলিশি আপত্তি সত্ত্বেও এফআইআরের প্রতিলিপি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার বেঞ্চে ধৃত দুই সাংবাদিকের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল।
প্রবীর এবং অমিতকে গত মঙ্গলবার গ্রেফতারের পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন’ (‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ বা ইউএপিএ)-এ মামলা করে দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ তোলা হয়, চিনপন্থী প্রচার চালানোয় যুক্ত ওই পোর্টালটি। ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে জমা দেওয়া আবেদনে পুলিশ দাবি করে, আমেরিকান ধনকুবের এবং তাঁর শাংহাইয়ের সংস্থার কয়েক জন কর্মীর সঙ্গে এই সংক্রান্ত ইমেল চালাচালি করেছিলেন প্রবীর। ধৃত দু’জনেরই ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের আরও অভিযোগ, বিদেশ থেকে আসা টাকার জোরে কৃষক বিক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে ভারতে অত্যাবশ্যক পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত করার চক্রান্তে জড়িত ছিলেন ধৃতেরা। একটি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রবীর উনিশের নির্বাচনে কারচুপির ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলেও দাবি তাদের। বৃহস্পতিবার বিচারক কউরের এজলাসে ওই মামলার শুনানিতে প্রবীরের আইনজীবী বলেন, এফআইআরের কপি পাওয়াটা অভিযুক্তের অধিকার, যা না দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। গ্রেফতারির কারণ লিখিত আকারে জানানো হলে সেটি সংবিধানিক রক্ষাকবচের কাজ করে।
বিশেষ সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব এই আর্জির বিরোধিতা করে বলেন, অভিযুক্তকে এ ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হতে হবে এবং তিনি একটি কমিটি গঠন করবেন। এ ক্ষেত্রে সরাসরি কোর্টে না এসে ধাপে ধাপে এগোনো উচিত। গ্রেফতারির কারণ ইতিমধ্যেই ধৃতদের জানানো হয়েছে বলে জানিয়ে বিশেষ সরকারি আইনজীবীর দাবি করেন, বিদেশি অনুদানের নামে ১১৫ কোটি টাকা পেয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। যদিও বিচারক কউর তাঁর নির্দেশ বহাল রেখে জানান, ধৃতদের এফআইআরের কপি দিতে হবে দিল্লি পুলিশকে।