মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে বিপর্যস্ত বাংলার অন্যতম প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম। সেখানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪-এ। নিখোঁজ ১০২ এবং আহত ২৬ জন। নিখোঁজ জওয়ানদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সিকিম সরকার ২২টি ত্রাণ শিবির তৈরি করেছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ২০১১ জন। সিকিমে নিহত ১৪ জনের মধ্যে গ্যাংটকে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, মঙ্গনে ৪ জন এবং পাকিয়ংয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। দশ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গা ভেঙে গিয়েছে। ফলে যাতায়ত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। এদিকে সিকিমে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। আটকে থাকা যাত্রীদের খাওয়ের ব্যাবস্থা করেছে রেল পুলিস। সিকিমে তিস্তায় হরপা বানের ফলে বিপর্যস্ত সিকিমের একাধিক এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে বন্ধ রয়েছে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম গামি যানবাহন। যার ফলে বহু যাত্রী যারা সিকিমে যাওয়ার জন্য নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমেছে তারা অনেকেই আটকে পড়ছে স্টেশনেই। তাই যাত্রী ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবে তাদের জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করল আরপিএফ। রাতটুকু স্টেশনেই কাটাচ্ছে বহু যাত্রী, পর্যটক ও সেনা। কাজেই আরপিএফ তাদের রাতের খাবারের আয়োজন করে।
এপ্রসঙ্গে এনজেপি আরপিএফ আইসি এমডি সোহেব আলম খান জানান, “যাত্রী, জওয়ান ও পর্যটকদের জন্য আমরা খাওয়ারের আয়োজন করেছি। সিকিম যাওয়ার জন্য বহু মানুষই এখানে অপেক্ষা করছেন। তাদের যতটা সুবিধা প্রদান করা যায় সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য।” এদিকে, তিস্তার বন্যায় জলপাইগুড়িতে ফ্ল্যাড রেস্কিউ এন্ড রিলিফ সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাটকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন রংধামালি বিএফটি স্কুল ও সংলগ্ন পাশে কিছু জায়গায় প্রায় ২৫০ মানুষের ঠাঁই হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের সহযোগিতায় তিস্তার মৌয়ামারি চড় এলাকার শিশু সহ বহু মানুষজনকে নৌকা ও বোট নিয়ে গিয়ে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসা হয়। বুধবার রাতে তাদের জন্য খাবারের আয়োজন করা ও স্কুল ঘরে রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তিস্তার গ্রাসে এই পরিবারগুলোর গবাদি পশু সহ ধান, লঙ্কা সহ ইত্যাদি বহু জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হযয় বলে বাসিন্দা জানান। প্রশাসনের সহযোগিতায় কোনওমতে তাঁরা প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরেছেন।