আরও একবার নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের তরফে আগাম কর্মসূচি ঘোষণা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে রাজভবনে নেই রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কর্মসূচি আংশিকভাবে পালিত হলেও নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তিনি। স্পষ্ট জানালেন, “যতক্ষণ না রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা হবে, তাঁর কাছে আমাদের দাবিদাওয়া পেশ করতে পারব, ততক্ষণ এই ধরনা চলবে। আমি নিজে এখানেই রাত কাটাব।” তবে তার আগে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে পৌঁছে বাইরে থেকেই একটি স্মারকলিপি জমা দেবেন। গত মঙ্গলবার সময় দিয়েও দিল্লীর কৃষি ভবনে তৃণমূল প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। উলটে কৃষি ভবন থেকে দিল্লী পুলিশ তাঁদের তুলে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে সেদিনই অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, ৫ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার একই দাবিতে রাজভবন অভিযান হবে, সঙ্গে থাকবেন ১০০ দিনের কাজে বঞ্চিত মানুষরা। দাবিদাওয়া তুলে ধরা হবে রাজ্যপালের কাছে। সেইমতো এদিন সকাল থেকে রাজভবনের নর্থ গেটে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন দলের কর্মী, সমর্থকরা। কিন্তু রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বন্যা পরিস্থিতি দেখতে উত্তরবঙ্গে চলে যান। ফলে দিনভর অপেক্ষা করেও সাক্ষাৎ হয়নি তাঁর সঙ্গে।
এদিন সন্ধ্যায় ধরনামঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কর্মসূচি ঠিক ছিল। রাজ্যপাল কেরলে ছিলেন। ৪ তারিখ কলকাতায় আসার কথা ছিল। আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার ৩০ মিনিট পর রাজভবন থেকে বিভিন্ন গ্রুপে মেসেজ করা হয় যে রাজ্যপাল দিল্লি যাবেন। সেখান থেকে ফিরতে পারেন। আজ সকাল ১১.৩০ নাগাদ মেল আসে রাজ্যপাল হঠাৎ, শিলিগুড়িতে আছেন। সেখানে আমাদের যেতে বলেন। ২-৩ দিন যদি শিলিগুড়ি থাকেন তো যেতে পারি। মেল আবার পাঠানো হল। জানলাম ৪ টে পর্যন্ত উনি শিলিগুড়ি থাকবেন। এই জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। আমাদের রাজ্য সভাপতির নেতৃত্বে মন্ত্রীরা চিঠি দিতে যাবেন রাজভবনে। ভিতরে ঢুকবেন না। চিঠিটা আধিকারিককে দিয়ে চলে আসবেন।” এর পর তিনি জানান, “যতক্ষণ না রাজ্যপাল ফিরবেন, আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন, ততক্ষণ এখানে ধরনা চলবে। আমি নিজে এখানে রাত কাটাব।” এখানেই থেমে থাকেননি অভিষেক। “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের পথ অবলম্বন করেই তৃণমূল রাস্তায় নেমেছে। গায়ের জোরে মানুষের টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যপালকেও এই প্রশ্ন করব। ২০ লক্ষ মানুষকে দিয়ে কাজ করিয়েছেন কিনা? আর কাজ করিয়ে কোন আইনে টাকা আটকে রেখেছেন? শুনলাম, রাজ্যপাল শিলিগুড়ি থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সেদিন সাধ্বী জ্যোতি পালিয়ে গেলেন। রাজ্যপাল চলে গেলেন। ইডি আমায় নোটিস দিচ্ছে, আমি কলকাতায় আছি। বিজেপি নেতারা কেন পালিয়ে যাবেন?”, সাফ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।