১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণের মূল চক্রী তিনি। ৭০-এর দশকে তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল কুখ্যাত ডি কোম্পানি। মাদক কারবার, তোলাবাজি, খুন, জঙ্গি কার্যকলাপ-সহ নানা কুখ্যাত ঘটনায় বার বার নাম জড়িয়েছে তাঁর। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তালিকাতেও তিনি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’। সেই দাউদ ইব্রাহিম বর্তমানে পাকিস্তান সরকারের শীর্ষপদে আসীন। একেবারে পাক গোয়েন্দা সংস্থার আইএসআই-এর স্পেশাল অ্যাডিশনাল ডিজি। এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যম। শুধু তাই নয়, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, একেবারে নিয়োগপত্র দিয়ে আইএসআই-এর শীর্ষপদে নিয়োগ করা হয়েছে দাউদকে। করাচিতে ফ্লিনটচফ রোডের দাউদের বাসভবনেই নাকি তাঁর অফিস। নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। আইএসআই প্রধান নদিমানজুমের কাছে রিপোর্ট করছেন তিনি। সবমিলিয়ে বলা যায়, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাভক্ত, মুম্বই হামলা-সহ অনেক বিস্ফোরণের মূল চক্রীকে একেবারে জামাই আদরে রেখেছে পাকিস্তান। যদিও ইসলামাবাদের তরফে দাউদের আইএসআইয়ের শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। একেবারে দাউদের সে দেশে থাকার কথাই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। যদিও পাক পুলিশের বিশেষ বাহিনী ২৪ ঘণ্টা দাউদকে ঘিরে রাখে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, সুদূরপ্রসারী ভাবনা থেকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তা পেতেই এই পদক্ষেপ পাক সরকারের। ডিসেম্বরেই বড় দুটি পরীক্ষা রয়েছে পাকিস্তানের। প্রথমত, আন্তর্জাতির আর্থিক তহবিলের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের বার্ষিক মূল্যায়ণ। এফএটিএফ যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার প্রমাণ পায়, তাহলে ফের ধূসর তালিকায় যাবে এই দেশ। সেক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তা পাবে না। তাই জঙ্গি নেতাদের সরকারি পদে বসিয়ে, তাদের কালো টাকা সাদা করিয়ে, জঙ্গি মদতের অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পাক সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, আইএসআই অফিসার নিজের দায়িত্বে অনুমতি ছাড়া ২৫ লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। আর অনুমতি নিয়ে যে কোনও অঙ্কের টাকা খরচ করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই দাউদ ইব্রাহিম আইএসআইয়ের শীর্ষপদে আসীন হওয়ায় অনেক সুবিধা পাবেন।