গ্রামে কোনও শ্মশান নেই। দেহ সৎকারের জন্য অনেক কিলোমিটার রাস্তা পার করে যেতে হয়। গ্রামে যাতে একটা শ্মশান তৈরি করা হয়, সেই আর্জি নিয়েই দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাব ডিভিশনাল ম্য়াজিস্ট্রেট। একবার গিয়েছেন, দুইবার গিয়েছেন, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। তাই তৃতীয়বারের জন্য় এসডিএমের কাছে আর্জি জানাতে গিয়েছিলেন। আর তাতেই রেগে কাই সরকারি আধিকারিক। শাস্তি হিসাবে আবেদনকারী ওই ব্যক্তিকে শাস্তি দিলেন ‘মুরগি’ হয়ে থাকার। এসডিএমের ঘরে এক ব্যক্তি এমন সাজা পেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে লুকিয়ে ছবি তুলে নিয়েছিলেন। সোশ্য়াল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে যায়। প্রশাসনের নজরে আসতেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল ওই সরকারি আধিকারিককে।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের বরৈলিতে। জানা গিয়েছে, বরৈলির মীরাগঞ্জের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট উদিত পওয়ারের কাছে এক ব্যক্তি শ্মশান তৈরির আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনবার একই আর্জি জানানোয় রেগে যান এসডিএম। তিনি ওই ব্য়ক্তিকে হাঁটু গেড়ে ‘মুরগি’র মতো দাড়িয়ে থাকতে বলেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ভাইরাল হতেই অভিযোগ অস্বীকার করেন এসডিএম। তিনি বলেন, ‘আমি যখন অফিসে ঢুকি, তখন ওই ব্যক্তি ওরকমভাবেই মাটিতে বসেছিলেন। আমি জানতে চাই কেন এমনভাবে বসে রয়েছেন। এমনকী, উপস্থিত অন্যান্যদের ওই ব্যক্তিকে তুলে দাঁড় করাতে বলি’।
বিষয়টি জেলাশাসকের কাছে গড়াতেই তিনি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে জানা যায়, ওই ঘটনায় এসডিএম-ই অভিযুক্ত। এরপরই অভিযুক্ত এসডিএমকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
যে ব্য়ক্তিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল মুরগি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার, তিনি বলেন, ‘আমি এসডিএমের কাছে একটি শ্মশান তৈরির আর্জি জানাতে গিয়েছিলাম। মন্দনপুর গ্রামে কোনও শ্মশান নেই, অনেক দূর যেতে হয় আমাদের। সেই জন্য গ্রামে একটা শ্মশান তৈরি করে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু উনি রেগে গিয়ে আমার চিঠি ছুড়ে ফেলে দেন। আমায় মুরগি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। আমি যখন জিজ্ঞাসা করি যে কেন এমন করছেন, উনি আমায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। আমি ওনাকে বলি যে বিচার মিলছে না বলে আমি তিনবার এসেছি ওনার দফতরে। যতদিন অবধি শ্মশান তৈরি করে দেওয়া হবে না, ততদিন আমি এভাবেই আসব চিঠি নিয়ে। এরপর উনি বলেন আমি অভিনয় করছি। সরকারি নথিতে কোনও শ্মশানের উল্লেখ নেই। কেবল গোরস্থানের উল্লেখ রয়েছে’।