১২৪(ক) ধারায় পরিবর্তন আনতে সংসদের নিম্নকক্ষে বিল পেশ করা হয়েছে। পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলছে বর্তমানে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা নিয়ে মামলার শুনানি পিছিয়ে দিতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। মামলাগুলি যেতে চলেছে শীর্ষ আদালতের বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৯৬২ সালেও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। সেই সময়েও মামলার বিচার করেছিল পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। এবারও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চ। পাঁচ বা সাত বিচারপতিকে নিয়ে এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হবে। এদিন এই সিদ্ধান্ত জানানোর পাশাপাশি এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি পিছিয়ে দিতে কেন্দ্রের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বদলে নয়া বিধান আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ১২৪(ক) ধারায় পরিবর্তন আনতে সংসদের নিম্নকক্ষে বিল পেশ করা হয়েছে। পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলছে বর্তমানে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা নিয়ে মামলার শুনানি পিছিয়ে দিতে শীর্ষ আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সেই আবেদন সটান খারিজ করে দিয়েছে আদালত। সেইসঙ্গে এই বিষয়ে শুনানি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা নিয়ে মামলার বিচার করা উচিত। এজন্য পাঁচ অথবা সাত বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হবে। সেই সাংবিধানিক বেঞ্চই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা বিচার করবে। এই প্রসঙ্গে ১৯৬২ সালের রায়ের উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত জানায়, সেইসময়ে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ১২৪(ক) ধারার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা বহাল রেখেছিল। তাই এই আইনের বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চই গঠন করা দরকার।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আর্জি জানান, সরকার যেহেতু ভারতীয় দণ্ডবিধি নতুন চেহারায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা নামে পেশ করেছে সংসদে এবং তা বিবেচনাধীন আছে, তাই এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হোক। কেন্দ্রের এই আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ১২৪(ক) ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জের শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হল।