শহরে কর্মস্থল হলে বা বিভিন্ন কাজে শহরে যাওয়ার জন্য এখনও ফেরিকেই পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন শহরতলীর লক্ষ লক্ষ মানুষ। তাই সেই নৌপথের চেহারা বদলে দিতে এবার নয়া প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। নিত্যযাত্রীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে একাধিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা কার্যকর হবে রাজ্যের বিভিন্ন নৌপথে। শুধুমাত্র যাত্রী পরিবহণ নয়, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। এক হাজার কোটির বেশি টাকা খরচ করে ফেরি পরিষেবার আমূল পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ত্রিবেণী থেকে গেঁওখালি ও কল্যাণী থেকে নূরপুর- গঙ্গার বুকে এই দুই নৌপথকে রাজ্য সরকার এই বিশেষ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছে। রাজ্যের তরফে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন ও ৬০০ টন পণ্য ফেরি হয় ওই দুই নদীপথে। তাই ওই ফেরিঘাট থেকে নৌযান, সব ক্ষেত্রেই বদল ঘটানো প্রয়োজন বলে মনে করছে সরকার। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সুরক্ষার জন্য ঘাটগুলিতে লাগানো হবে রেলিং। নৌকা বা ভেসেলে ওঠার আগে যে ব়্যাম্পগুলিতে দাঁড়াতে হয়, সেগুলি যাতে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা সহজে ব্যবহার করতে পারেন সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যাত্রীদের অপেক্ষা করার জায়গা থেকে বাথরুম, বদলে যাবে সবই। স্মার্ট টিকেট টাকার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে এই প্রকল্পে।
শুধু তাই নয়। আগামিদিনে গ্রিন ভেসেল চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। ওই ভেসেলগুলি কোনও বিদ্যুৎ ছাড়াই চলবে। নতুন ১৫টি জেটি তৈরি করা হবে এই প্রকল্পে। যে সব জেটি থেকে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন, সেখানে তৈরি হচ্ছে টার্মিনাল। হাওড়া, পানিহাটি, চুঁচুড়া, নৈহাটি, মেটিয়াবুরুজে টার্মিনাল তৈরি হওয়ার কথা। এছাড়া নিবেদিতা সেতু থেকে শুরু হবে কার্গো রুট, যেখানে পণ্যবাহী ট্রাকও যাতায়াত করতে পারবে। সূত্রের খবর, মোট ১০২১ কোটি টাকার প্রকল্প এটি। রাজ্য সরকারের তরফে ৩০৬ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আর বিশ্ব ব্যাঙ্ক দিয়েছে বাকি ৭১৫ কোটি টাকা।