এ বার রাজ্যের প্রত্যেক পরিবারের জন্য একটি করে নির্দিষ্ট পরিচিতি (ইউনিক আইডেন্টিটি) তৈরির পথে পা বাড়াতে চলেছে রাজ্য সরকার। লক্ষ্য, বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদানের পথ মসৃণ করা। এবং প্রত্যেক পরিবারের জন্য ওই নির্দিষ্ট পরিচিতি-ভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরির ভিত হিসেবে আধার সংযোগের ‘ছাঁকনির’ উপরেই আস্থা রাখছে তারা।
রাজ্যের সর্বত্র সমীক্ষা চালিয়ে এই পরিবারভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরি করা হবে। অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এখন আধার নম্বর থেকে যেমন এক জন ব্যক্তি সম্পর্কে বায়োমেট্রিক-সহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়, তেমনই একটি পরিবার সম্পর্কে জরুরি তথ্য এক লপ্তে হাতে আসবে রাজ্যের এই নতুন ইউনিক আইডেন্টিটি থেকে। যেমন, পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য, তাঁদের কে কোন সরকারি পরিষেবার সুবিধা পান ইত্যাদি বিষয়গুলি তোলা থাকবে ওই তথ্যভান্ডারে। যে সমস্ত পরিবার কোনও না কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নেয়, প্রাথমিক ভাবে তাদেরই এই পরিচিতি দেওয়া হবে। তবে তার বাইরেও কোনও পরিবার তা চাইলে, বিমুখ করবে না রাজ্য সরকার।
সরকারি পরিষেবা পেতে এখন অনেক কাগজপত্রই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা-আলাদা ভাবে জমা দিতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ। প্রশাসনিক সূত্রে দাবি, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে, বারবার কাগজ জমা দেওয়ার ঝক্কি অনেকটাই কমবে। বলা চলে, ব্যাঙ্কে কেওয়াইসি চালু হওয়ার পরে অনেকটা যে ধরনের সুবিধা পান গ্রাহকেরা।
কর্নাটকে ‘কুটুম্ব’ নামে একটি পদ্ধতি চালু আছে। তাতে একটি পরিবারকে একটি নির্দিষ্ট পরিচিতি-নম্বর (ইউনিক আইডি) দেওয়া হয়। সেই নম্বরের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের তথ্য ধরা থাকে। এই পদ্ধতি চালুর আগে একটি পরিবার কোনও পরিষেবা পেতে চাইলে, সরকারের কাছে আবেদন করতে হত। প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হত অনলাইনে বা সরাসরি গিয়ে। সেই নথি যাচাইয়ের পরে পরিষেবা চালু হত। নতুন পদ্ধতিতে প্রত্যেক পরিবারের প্রায় সব প্রয়োজনীয় তথ্যই যাচাই হয়ে জমা থাকে সরকারের ঘরে। ফলে, কোনও পরিষেবার ক্ষেত্রে নতুন করে নথি জমা বা তা যাচাইয়ের প্রয়োজন চট করে পড়ে না। এতে সরকার ও উপভোক্তার সময় বাঁচে, মসৃণ হয় পরিষেবা প্রদানের প্রক্রিয়া।