সম্প্রতি মোদী ঘোষণা করেছেন তাঁর সরকারের তৃতীয় মেয়াদে (২০২৪ লোকসভা নির্বাচন) তিনি ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ অর্থনীতিতে পরিণত করবেন। কিন্তু এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যখন অমৃতকালের প্রচার চালানো হচ্ছে, জি-২০’র মঞ্চ ব্যবহার করে প্রচার চলছে, তখন প্রদীপেরই তলায়ই অন্ধকার। শহরে কাজ নেই, গ্রামীণ ভারতেও কর্মসংস্থান কমছে। সর্বত্রই বেকারত্বের যন্ত্রনা। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি। এই জোড়া সঙ্কটে মোদীর ‘নয়া ভারত’ এখন দৃশ্যতই কোণঠাসা।
চলতি অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের চাহিদা বাড়ছে লাগাতার। মে মাসে রেকর্ড সাড়ে ৩ কোটি পরিবার ১০০ দিনের কাজ চেয়ে আবেদন করেছিল। বর্ষার মরশুমে আশা করা হয়েছিল, এক ধাক্কায় সেই চাহিদা অনেকটাই কমবে। অন্তত আগের কয়েক বছরে তেমনই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগস্টে ১০০ দিনের কাজের আবেদন করেছে ২ কোটি পরিবার, যা বেনজির এবং গত আর্থিক বর্ষের থেকে অনেক বেশি।
তথ্য বলছে, বিস্কুট থেকে স্কুটার— সব পণ্যেরই বিক্রির হার কমেছে গ্রামীণ এলাকায়। আর শহর? একঝাঁক বেসরকারি সমীক্ষা সংস্থার রিপোর্ট বলছে, অগস্ট মাসে শহুরে এলাকাতেও আধুনিক সেক্টরে চাকরি কমেছে। ৩ শতাংশ কমেছে ই-রিক্রুটমেন্ট। কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সবথেকে বড় প্ল্যাটফর্ম নকরি জবস্পিক ইনডেক্স অনুযায়ী, বিমা, তথ্য-প্রযুক্তি, অটোমোবাইল, চিকিৎসা পরিষেবা এবং বিপিও—প্রতিটি সেক্টরে গত কয়েক বছরের তুলনায় জুলাই-আগস্টে নিয়োগ আচমকা কমেছে ৬ শতাংশ।
উল্লেখ্য, গ্রামীণ অর্থনীতিই বস্তুত ভারতের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। লকডাউনের প্রভাব কাটিয়ে সবার আগে গ্রামীণ অর্থনীতিই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। সৌজন্যে সেই ১০০ দিনের কাজ। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে ৯৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ও খরচ হয়েছিল। আভাস ছিল স্পষ্ট, প্রকল্পের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের বাজেটে এই খাতে মাত্র ৬০ হাজার কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে?