এবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সুরে সুর মিলিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরর তুলনা টেনে তিনি বললেন, ‘‘ধনকরের বদভ্যাস ছিল ট্যুইট করা৷ তবে তিনি আলোচনা করতেন৷ আর ইনি আলোচনার দরজা বন্ধ করে রাখছেন৷ যেটা করছেন সেটা অরাজকতা হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে৷ বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করছেন৷ শিক্ষামন্ত্রীকে ডেকে আলোচনায় বসুন৷ একতরফা এমন ব্যবস্থা করছেন যেটা জটিল ব্যবস্থা হচ্ছে৷ এক্তিয়ার বর্হিভূত কাজ করছেন।’’ প্রসঙ্গত, সোমবার রাজ্যের ৬ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রাণী মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। এদের মধ্য কয়েকজনকে আজই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলে রাজ ভবন সূত্রে খবর। রাজ্যপাল কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নেই সেখানে তিনি নিজেই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন৷ এখনও উপাচার্যবিহীন অবস্থায় রইল রাজ্যের দশটি বিশ্ববিদ্যালয়।
উল্লেখ্য, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবিষয়ে বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্র এজেন্টদের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করছে। যাদের সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার যোগ নেই, তাঁরা উপাচার্য হচ্ছেন৷ জগদীপ ধনখড় কখনও এমন আচরণ করেননি৷ ফাইল চালাচালি হত৷ তর্কাতর্কি হত৷ আলোচনার পরিসর খোলা থাকত। আর ইনি জেমস বন্ড মার্কা আচরণ করছেন।’’ এদিন রাজ্যপাল প্রসঙ্গে খানিক একই ধরনের মন্তব্য শোনা যায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মুখে৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘গৈরিকীকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন (রাজ্যপাল)৷ বিজেপির এজেন্ট হিসাবে চাইছেন, শিক্ষাক্ষেত্র এলোমেল করে দিচ্ছেন৷ নিজের লোক এনে বসিয়ে দিচ্ছেন৷’’ এদিন অন্যান্য বিষয় নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান কুণাল৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ‘ওয়ান ভোট, ওয়ান ইলেকশন’ নিয়ে৷ ভারতে এই নীতি প্রণয়ন করা যায় কিনা, তা জানতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে৷ এ বিষয়ে কুণালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘‘ওয়ান ভোট, ওয়ান ইলেকশন’ করছে নজর ঘোরাতে৷ ২০২৪ সালে ফিরে আসছে না৷ নানা কারণে বিভ্রান্ত করতে তাই এইসব করছে। মানুষ তাতে বিভ্রান্ত হবে না। ভোট এগিয়ে আসতে পারে, এই কারণে রটছে কারণ বিজেপি ভাল অবস্থায় নেই৷ তাই ভোট এগোতে পারে৷ আমরা প্রস্তুত আছি।’’ অন্যদিকে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক বাম-কংগ্রেসকেও এদিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুণাল৷ ‘‘বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস একাই ১০০। কিন্তু জোটের স্বার্থে, আমরা জোট ধর্ম পালন করতে উৎসাহী৷ কিন্তু কংগ্রেস, সিপিএম যদি দুর্বল করার চেষ্টা করে এই রাজ্যে তাহলে তারা শূন্য পাবে৷ আর এই চিন্তা ওদের দিল্লি নেতাদের৷ কংগ্রেস আর সিপিএম নেতারা ঠিক করুন তাঁরা কী করবেন? ইন্ডিয়া জোটের মিটিংয়ে খাড়্গে বলছেন, এজেন্সির তৎপরতা বাড়বে। আর এখানে অধীর চৌধুরী ও সিপিএম দ্বিচারিতা করছেন। আমাদেরকেও এই গোটা বিষয়টা দেখতে হবে৷ যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ তো কাজ না করেই করেই অভ্যস্ত৷ এদের জন্যই তো বাংলার ওয়ার্ক৷ কালচারের এই বদনাম ছিল ৩৪ বছর ধরে’’, বক্তব্য তৃণমূল মুখপাত্রের।
