এবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের একটি বিশেষ সিরিজে ফুটে উঠতে চলেছে কলকাতার দুর্গোৎসবের খুঁটিনাটি। প্রতিমা নির্মাণ থেকে শুরু করে মণ্ডপ তৈরি, পুজোর শপিং থেকে শুরু করে স্পেশ্যাল রেসিপি, সিঁদুর খেলা থেকে শুরু করে বনেদি বাড়ির পুজো-সবই দেখা যাবে এই সিরিজ। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল ৬ই সেপ্টেম্বর থেকে সম্প্রচার করতে চলেছে ‘মেগাফেস্টিভ্যাল’। ছয় এপিসোডের এই সিরিজের একটি এপিসোড তৈরি হয়েছে কলকাতার দুর্গাপুজো নিয়ে। অন্য পাঁচটি এপিসোডে রয়েছে মুম্বইয়ের গণেশ পুজো, কেরালার ওনাম, দিল্লী ও হায়দরাবাদের ঈদ, নাগাল্যান্ডের হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল এবং হোলি। এক বছর আগে যখন পুজোর মুখে দমদম এয়ারপোর্টে নেমেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান সেলিব্রিটি মাস্টার শেফ গ্যারি মেহিগ্যান, তখনও তিনি জানতেন না তাঁর জন্য কতটা বিস্ময় অপেক্ষা করছে কলকাতায়। হয়তো ভেবেছিলেন, আর পাঁচটা শহরের নিজস্ব কিছু কার্নিভালের মতোই কলকাতার দুর্গাপুজো। তবে খটকাটা লেগেছিল এয়ারপোর্টে বিপুল ভিড় দেখে। সবাই পুজোয় বাড়ি ফিরছেন। গ্যারি বুঝেছিলেন এটি নেহাত উৎসব নয়, বাঙালিদের কাছে আবেগের শিকড়।
উল্লেখ্য, ইউনেস্কো কলকাতা দুর্গাপুজোকে ইনট্যাঞ্জিবল হেরিটেজের সম্মান দেওয়ার পর তার স্বাদ পেতে চলেছে সারা পৃথিবী। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের মেগা ফেস্টিভ্যাল শোয়ে জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির পুজো। এই শোয়ের অন্যতম নির্মাতা এবং হোস্ট মেহিগ্যান একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “কলকাতার দুর্গাপুজো একটা অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে অশুভ শক্তিকে শুভ শক্তি বিনাশ করে। এটা তো পুরাণের ঘটনা। তবে বাস্তবে পুজোটা যখন হয়, তখন সেখানে বাড়ির মহিলারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকেন। দুর্গাপুজোর মাধ্যমে সত্যিই এখানে মহিলাদের ক্ষমতায়ন হয়।” মাস্টার শেফ বলছেন, “দুর্গাপুজোর সময়ে শহরের এক একটা পাড়া এক এক রকমের হয়ে যায়। কারও সঙ্গে কারও মিল নেই, অথচ কোথাও সবাই যেন এক। এই ব্যাপারটা আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছে। আমরা প্রথমে এই এপিসোড ৮০ মিনিটের রেখেছিলাম। সেখান থেকে খুবই কষ্ট করে ৪৫ মিনিটে নামাতে হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কলকাতার অসামান্য রান্না এবং মিষ্টিকে অনেকটা জায়গা দিতে হয়েছে। হাজার হাজার শিল্পী অমানুষিক পরিশ্রম করে এত মণ্ডপ তৈরি করেন, তার অসামান্য সৌন্দর্য্যের কথা অনেকেরই অজানা।” মেগাফেস্টিভ্যাল-এর সম্প্রচার শুরু হলে কলকাতার পুজো আরও পরিচিতি পাবে বলেই আশাবাদী ওঁরা।
