ইসরোর হাত ধরে তৈরি হয়েছে নতুন ইতিহাস। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই প্রথম পদার্পণ করেছে কোনও দেশের মহাকাশযান। সফল ভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছুঁয়ে ফেলেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। আর এই বিষয়ে আলোচনা হলেই বারবার ফিরে ফিরে আসে ভারতের প্রথম মহাকাশচারী রাকেশ শর্মার নাম। ইসরো ও রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থার যুগ্ম অভিযান, সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘সুয়াজ টি-১১’-এর অংশ হিসেবে মহাকাশে গিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। রাকেশের সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ার সহ-নভশ্চররা। মোট ৭ দিন ২১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট মহাকাশে কাটিয়েছিলেন রাকেশ শর্মারা। ১৯৮৪ সালের এই সফল অভিযানে ইতিহাস তৈরি হয়েছিল ভারতে। “ভারতকে মহাকাশ থেকে কেমন দেখতে লাগছে?” ইন্দিরা গান্ধীর এহেন প্রশ্নের উত্তরে রাকেশ যে জবাব দিয়েছিলেন তা আজ মনের মণিকোঠায় সমুজ্জ্বল। আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিল দেশের আমজনতা। রাকেশ সেদিন বলেছিলেন, “সারে জাঁহা সে আচ্ছা।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসে রাকেশ শর্মার ছবি সোশাল মিডিয়ার দৌলতে ফের প্রকাশ্যে আসে। বর্তমানে তামিলনাড়ুর কুনুর এলাকায় এক ছোট্টো গ্রামে থাকেন রাকেশ শর্মা। স্ত্রী মধুকে নিয়ে তাঁর ছোট্ট সংসার। লোকজনের ভিড়, খ্যাতি থেকে দূরে শান্ত জীবন কাটাতেই ভালবাসেন আকাশছোঁয়া এই মানুষটি। ২০২১ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন। বেঙ্গালুরুর একটি অটোমেশন সংস্থার চেয়ারম্যান পদে আসীন ছিলে রাকেশ। পাশাপাশি ইসরোর জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও ছিলেন। চন্দ্রযান-৩ মিশন যে সফল হবেই সে ব্যাপারে বরবারই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন রাকেশ শর্মা। আর শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে তাঁর প্রত্যাশা। রাকেশের কথায়, মহাকাশ অনুসন্ধান কার্যক্রমের একটি অসাধারণ যুগ এখন শুরু হয়েছে ভারতে। হাসিমুখে তাঁর আক্ষেপ, এই সময় যদি তরুণ থাকতেন, তাহলে হয়তো এই ঐতিহাসিক মিশনে অংশ নিতে পারতেন তিনি। “আমি বিস্মিত নই, কারণ আমি নিশ্চিত ছিলাম ইসরো ইতিহাস তৈরি করবেই। আমি ইতিমধ্যেই একজন গর্বিত ভারতীয়। আর এখন আরও গর্বিত বোধ করছি। আমি জানতাম চন্দ্রযান-২-এর ব্যর্থতাকে খুঁজে বের করে, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চন্দ্রযান-৩-কে সফল করবে ইসরো। আমার মনে হয় আমি একটু বেশি তাড়াতাড়ি জন্মেছি। আমার এখন ৭৫ বছর বয়স। আর ঠিক এই সময় মহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচির অসাধারণ যুগ শুরু হয়েছে ভারতে। তরুণ থাকলে এই সময় আমিও এই কর্মযজ্ঞে সামিল হতে পারতাম। তবে একজন ভারতীয় হিসেবে ইসরোকে অনেক অভিনন্দন জানাই”, বক্তব্য রাকেশের।