রেলযাত্রীদের সুরক্ষা, স্বাচ্ছন্দ্য ও রেলের সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়নে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পকে ব্যবহার করা হচ্ছে না। লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি সাংসদদের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে এই প্রকল্প। এই অভিযোগ করলেন বারাসতের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার।
তাঁর অভিযোগে সিলমোহরও দিয়েছেন রেলযাত্রীরা। অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে রাজ্যে ৩৭টি স্টেশন তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৫০৩.৪ কোটি টাকা। সেই তালিকায় রয়েছে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার চাঁদপাড়া। রেল সূত্রে জানা যায়, কোনও স্টেশনের গুরুত্ব বাড়ে প্রধানত সেই স্টেশনের ডেলি ও মান্থলি টিকিট বিক্রি ও প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে। সেই নিরিখে আর ১০-১২টা স্টেশনের মতোই সাধারণ মানের সাবারবান গ্রেড ৩ স্টেশন হিসেবেই চাঁদপাড়ার অবস্থান। রেলযাত্রীদের দাবি, এই শাখায় বেশ কিছু স্টেশন যাত্রী চলাচলের নিরিখে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন আগে প্রয়োজন। দুর্ঘটনাপ্রবণ বামনগাছি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা। বেশিরভাগ ফুটব্রিজগুলি বিপজ্জনক হয়ে আছে। তাই একটা স্টেশনের পেছনে বিপুল টাকা খরচ না করে গুরুত্ব অনুযায়ী সমস্যাগুলির পর্যায়ক্রমে সমাধান করা উচিত।
সাংসদ বলেন, ‘‘মানুষ বা রেলযাত্রীদের সুবিধা-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা না ভেবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই রেল দফতরের এই সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় হাবড়া স্টেশনকে লম্বা করা এবং কৃষকদের সবজি সংরক্ষণের জন্য বাতানুকূল গোডাউন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা আজও করা হল না। সর্বক্ষেত্রে রেল হকারদের অজুহাত দেখিয়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ ও বারাসত-হাসনাবাদ এই দুই শাখায় উন্নয়ন আটকে রাখা হচ্ছে। হকারদের ক্ষেত্রেও সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেল। কোনও সমস্যা থাকলে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনাও করছে না। চাঁদপাড়া স্টেশনকে অমৃত ভারত প্রকল্পের জন্য বাছা হয়েছে শুধুমাত্র লোকসভা নির্বাচনে আগে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে রাজনৈতিক সুবিধা পাইয়ে দিতেই। এই শাখার রেলযাত্রীদের কথা ভাবেননি বনগাঁর সাংসদ এবং কেন্দ্র। ক্ষুদ্র ও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থে নিত্যদিনের রেলযাত্রীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।’’