এ বছরের গোড়ায় আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, কারচুপি করে ধনী হয়েছে আদানিরা। শেয়ার বাজারে তাঁদের যে অবস্থান, তার অনেকটাই কৃত্রিম। এরপরই দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের জেরে ধস নেমেছিল আদানির শেয়ারে। যা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এরপর শীর্ষ আদালতই সেবি তথা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়াকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারল না তারা। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওই তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে এ ব্যাপারে আরও ১৫ দিন সময় চেয়ে নিয়েছে সেবি।
রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সেবি জানিয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর ২৪টি লেনদেনের মধ্যে ১৭টির তদন্ত তারা করে ফেলেছে। আর ৭টি বাকি রয়েছে। সেবির এই ‘গড়িমসি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনেট বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট পেশের ৪৮ ঘণ্টা আগে ডেলয়েট অ্যান্ড হ্যাস্কিংস নামে অডিটর ফার্ম আদানি পোর্টের অডিটর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে। আদানি পোর্ট ও এসইজেড নিয়ে ইস্তফাপত্রে ডেলয়েট বলেছে যে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে যে সব লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সেগুলি অবশ্যই সেবির নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। হিন্ডেনবার্গ গোষ্ঠীর অভিযোগগুলিয়ে আদানি গোষ্ঠী নিরপেক্ষ তদন্তে রাজি হয়নি।’
হাত শিবিরের কথায়, এটা এখন পরিষ্কার যে ওই কোম্পানিতে ডেলয়েট গরমিল দেখতে পেয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সেই অনিয়ম কি সেবি দেখতে পাচ্ছে? উল্লেখ্য, এর আগেও একবার সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের মেয়াদ বাড়িয়েছিল। তা বাড়িয়ে ১৪ অগস্ট করা হয়েছিল। শুধু হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট নয়, আদানি গোষ্ঠীর বেশ কিছু কোম্পানিতে পাবলিক শেয়ার হোল্ডিংয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম হল পাবলিক কোম্পানিগুলিতে পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং থাকতে হবে অন্তত ২৫ শতাংশ। এ ব্যাপারেও সেবিকে তদন্ত করে দেখতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। জানা গিয়েছে, ২০২০ সাল থেকে বন্দর এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিকাঠামো খাতে আদানির ব্যবসায় যে বিদেশি লগ্নি এসেছে তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে সেবি।