চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল-সহ বিজেপি বিরোধী ২৬ টি দল মিলে তৈরি হয়েছে ‘ইন্ডিয়া'(ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স)। মোদী সরকারকে উৎখাত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে মিলিয়ে প্রস্তুত সোনিয়া গান্ধী, নীতীশ কুমার, অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা। তবে সেই ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রীর মুখ কে হবে তা নিয়ে এখনও কোনও আলোচনাই হয়নি জাতীয় স্তরে। কিন্তু এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার হিসাবে উঠে এল তৃণমূল নেত্রীর নাম। রবিবার তৃণমূল সমর্থকদের সংগঠন ‘ফ্যাম’-এর কনক্লেভে এই জল্পনা উস্কে দিলেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমরা।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়া জোট নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়াের মুখে শোনা গিয়েছিল, কোনও পদের পিছনে না দৌড়নোর কথা। কিন্তু তার মধ্যেও রবিবার ‘ফ্যাম’-এর কনক্লেভ থেকে মমতাকে প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট করে জল্পনা উস্কে দিলেন কুণাল এবং ফিরহাদ। সেই অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে ব্যাকগ্রাউন্ডও ছিল, ‘বলছে বাংলার জনতা, প্রধানমন্ত্রী হোক মমতা’। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্যেও উঠে এল সেই কথা। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের ঘোষিত অবস্থান, বিজেপিকে দিল্লি থেকে সরাতে হবে। কোনও পদের দৌড়ে নেই তৃণমূল। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রে সব সম্ভব।’ নিজের এই বক্তব্যের সমর্থনে ইতিহাসের বেশ কিছু ঘটনার উদাহরণও টেনেছেন কুণাল। তাঁর প্রশ্ন, ‘জ্যোতি বসুর কাছে যখন প্রধানমন্ত্রী হবার প্রস্তাব এসেছিল, তখন সিপিএমের কাছে কতজন এমপি ছিল?’
শুধু তাই নয়। ইন্দ্রকুমার গুজরাল থেকে শুরু করে এইচডি দেবেগৌড়ার প্রসঙ্গ টেনে কুণাল বোঝানোর চেষ্টা করেন জোট রাজনীতিতে মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়া অসম্ভব নয়। বরং সাতবারের সাংসদ, চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মমতাই ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্যতম দাবিদার। কুণালের সুরে সুর মিলিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘মমতাদি ২০ জুলাই আমাকে ডেকে বলেছিলেন। আমি যেন কোনওভাবে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দিদি প্রধানমন্ত্রী হবেন সেই কথা না বলি। দিদি আমাকে বলে আমার মুখ বন্ধ রাখতে পারবেন কিন্তু তৃণমূল কর্মীদের হৃদয়ে রয়েছেন তিনি। তাঁরা মমতাদিকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান।’ অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোট ভাল ফল করলে যে বাংলার অগ্নিকন্যাকেই প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট করে তৃণমূল এগোবে সেটা গতকালের কনক্লেভে অনেকাংশেই স্পষ্ট হয়ে গেল।