নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আর হাত থাকবে না প্রধান বিচারপতির। কেন্দ্রের পেশ করা সেই বিতর্কিত বিল নিয়ে এবার বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, যে সময় গোটা দেশের উচিত বিচারব্যবস্থার কাছে মাথা নত করা, সেসময় কেন্দ্র অরাজকতা আর নৈরাজ্যের কাছে মাথা নত করছে।
শনিবার এক টুইটে মমতার বক্তব্য,’যখন বিচারব্যবস্থার সামনে মাথা নত করা উচিত তখন বিজেপি নৈরাজ্যের কাছে মাথা নত করছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যে ৩ সদস্যের কমিটি রয়েছে তাতে প্রধান বিচারপতির ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে প্রধান বিচারপতির বদলে ওই কমিটিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আনার তীব্র বিরোধিতা করছি। আসলে ওদের ভোট প্রভাবিত করতে অসুবিধা হচ্ছে। এভাবে বিচারব্যবস্থার অবমাননার তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত’। মমতার অভিযোগ, ‘ওরা কি বিচারব্যবস্থাকে মন্ত্রীদের চালনা করা ক্যাঙ্গারু কোর্টে পরিণত করতে চাইছে? বিচারব্যবস্থার কাছে আমার অনুরোধ, ইন্ডিয়াকে বাঁচান। আমার দেশকে বাঁচান’।
গত মার্চে এক ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষমতা একচ্ছত্রভাবে মন্ত্রিসভার হাতে থাকবে না। এদের নিয়োগ করবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং প্রধান বিচারপতির যৌথ কমিটি। এই কমিটির সুপারিশ মেনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন। মূলত নির্বাচন কমিশনারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় ‘অকেজো’ করতে সংসদের বাদল অধিবেশনে একটি বিল পেশ করেছে মোদী সরকার। প্রস্তাবিত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (সংশোধনী) বিল অনুযায়ী, এবার থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির কোনও ভূমিকা থাকবে না। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ করা মন্ত্রিসভার এক সদস্য। অর্থাৎ ৩ সদস্যের কমিটির দুই সদস্যই হবেন সরকারি প্রতিনিধি। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনার পদে কারণ নাম নিয়ে বিরোধী দলনেতার আপত্তি থাকলেও সংখ্যাধিক্যের বলে সরকার তাঁকে উপেক্ষা করতে পারবে। কেন্দ্রের এই বিতর্কিত বিলের তীব্র বিরোধিতা করলেন মমতা।