কিছুদিন আগেই রাজ্যে শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই দফায় দফায় হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। সেই ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনতে তড়িঘড়ি নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মোতাবেক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে লালবাজার। আগেই জানানো হয়েছিল, ন’টি থানা নিয়ে তৈরি হচ্ছে ভাঙড় ডিভিশন (ভাঙড় ডিভিশনে থাকবেন দেড় হাজারের বেশি পুলিশকর্মী, থাকছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টও)। এবার জানা গেল, এই ডিভিশনে কত পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীকে রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভাঙড় ডিভিশনে একটি মহিলা থানাও করছে লালবাজার। সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ভাঙড় ডিভিশনে মোট ১৭৭৫ জন পুলিশ আধিকারিক ও কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। ভাঙড় ডিভিশনে থাকবেন দেড় হাজারের বেশি পুলিশকর্মী, থাকছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টও। কোন থানায় কতজন পুলিশ আধিকারিক, কতজন কনস্টেবল কতজন পুলিশ কর্মী থাকছেন, তা জানিয়েছে লালবাজার সূত্র।
প্রসঙ্গত, ভাঙড় ডিভিশনে যে ১০টি থানা থাকছে সেগুলি হল, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স, হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, নারায়ণপুর, ভাঙড়, বোদরা, চন্দনেশ্বর ও ভাঙড় মহিলা থানা। প্রতিটি থানায় কতজন ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর, মহিলা সাব ইনস্পেক্টর, কনস্টেবল পদমর্যাদার পুলিশকর্মী থাকছেন তার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হল। ভাঙড় ডিভিশনে আইপিএস পদ মর্যাদার একজন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার থাকছেন। ভাঙড় ডিভিশনের ন’টি থানার প্রত্যেকটিতে ২ জন করে ইনস্পেক্টর থাকছেন। এছাড়াও ১০ জন করে সাব ইন্সপেক্টর, ১০ জন মহিলা সাব ইন্সপেক্টর, ১২ জন অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইন্সপেক্টর, ৩ জন মহিলা অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইন্সপেক্টর, ৮০ জন কনস্টেবল, ৩০ জন মহিলা কনস্টেবল ও ২ জন করে ট্রাফিক সার্জেন্ট থাকবেন। পাশাপাশি, ভাঙড় মহিলা পুলিশ থানায় থাকবেন একজন মহিলা ইনস্পেক্টর, ৫ জন মহিলা সাব ইনস্পেক্টর, ৫ জন মহিলা অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইনস্পেক্টর ও ১৫ জন মহিলা কনস্টেবল। এই ডিভিশনের গোয়েন্দা দফতরে থাকছেন ৮ জন ইনস্পেক্টর, ১৫ জন সাব ইনস্পেক্টর, ২০ জন অ্যাসিস্টেন্ট সাব ইনস্পেক্টর ও ৫০ জন কনস্টেবল। স্পেশাল ব্রাঞ্চও থাকছে ভাঙড় ডিভিশনে।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই বারেবারে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়। ভোট পর্বে ভাঙড় মোট সাত জনের মৃত্যুর সাক্ষী থেকেছে। গত ১১ জুলাই গণনার দিন সন্ধে থেকে নতুন করে তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ভোট পরবর্তী হিংসায় জ্বলেছে ভাঙড়। রক্ত ঝরেছে, গুলি-বোমাবাজির ঘটনায় তটস্থ হয়ে রয়েছে ভাঙড়বাসী। ভাঙড়ের ঘটনার জেরে সামগ্রিকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্যের আইন শৃঙ্খলাও। তারপরই পুলিশমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। এজন্য আলাদা ডিভিশন তৈরিরও পরামর্শও দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ীই লালবাজার, ভাঙড় ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের তিনটি থানা ভেঙে তৈরি করছে নতুন থানা।