বাংলায় বিজ্ঞানমহলে নেমে এল শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট পরমাণু পদার্থবিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। শুক্রবার সকালে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পরিবার সূত্রের খবর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বিকাশের দেহ তাঁর মিন্টো পার্কের বাড়িতে আনা হচ্ছে। বিগত ২০১০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননা প্রাপ্ত পরমাণু বিজ্ঞানী বিকাশ ‘সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’-এর অধিকর্তা পদে ছিলেন। ছিলেন, ‘ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার’-এর ‘হোমি ভাবা অধ্যাপক’ পদেও। পরমাণু গবেষণা এবং বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক হিসেবে দেশে-বিদেশে সমাদৃত ছিলেন মুর্শিদাবাদের কান্দি রাজপরিবারের এই সন্তান। বিকাশের বাবা বিমলচন্দ্র সিংহ এবং দাদা অতীশ সিংহ ছিলেন রাজ্য সরকারের মন্ত্রী। প্রাক্তন সাংসদ অতীশ রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পদেও ছিলেন। বিকাশের জন্ম ১৯৪৫ সালে। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার পরে উচ্চতর পঠনপাঠনের জন্য ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বিকাশ। দেশে ফিরে এসে যোগ দিয়েছিলেন ‘ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার’ (বার্ক)-এ।
উল্লেখ্য, কলকাতায় ‘বার্ক’-এর ‘ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার’-এর প্রতিষ্ঠা এবং সেটিকে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার নেপথ্যে অগ্রণী ভূমিকা ছিল বিকাশের। গবেষণার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে আমজনতার মধ্যে বিজ্ঞান চেতনা প্রসারেও কাজও করেছেন এই বরেণ্য বিজ্ঞানী। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁকে সিলেবাস কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিল। বিকাশের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘মহান বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের অকাল প্রয়াণে শোকাহত। বাংলার এক কৃতী সন্তান, এই প্রতিভাবান পরমাণু পদার্থবিজ্ঞানী শুধুমাত্র জ্ঞানের জগতেই নয়, জনজীবনেও তাঁর অবদানের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করেছেন। আমরা তাঁকে ২০২২ সালে আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’ প্রদান করেছিলাম। এবং মঞ্চে তার ব্যক্তিগত উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। আমরা তাঁকে ২০২২ সালে ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে’ও সম্মানিত করেছিলাম। আমি তার পরিবার, বন্ধু, ছাত্র এবং ভক্তদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই’’, টুইটারে লিখেছেন তিনি।