নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারে নেমে এল শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন জনপ্রিয় অভিনেতা তথা মডেল অর্ধেন্দু বসু। বিগত দশকে টেলিভিশন জগতের পরিচিত মুখ হওয়ার পাশাপাশি আরও একটি বিশেষ পরিচয় ছিল তাঁর। সম্পর্কে তিনি ছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাইপো। গত সোমবার মুম্বইয়ে আচমকা হৃদরোগে প্রয়াত হন অর্ধেন্দু। অর্ধেন্দু বসুর স্ত্রী কারমিন বসু সংবাদ মাধ্যমকে প্রথম তাঁর মৃত্যুর খবর জানান। এক ছেলেও রয়েছে তাঁর। নাম নেদাল বসু। মডেলিংয়ের জগতে অত্যন্ত পরিচিত নাম ছিলেন অর্ধেন্দু। পাশাপাশি কিছু ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। এমনকী, পেয়েছিলেন ‘ভারতীয় ব্রুস লি’ এর তকমাও। সত্তরের দশকে তৎকালীন বম্বে তে মডেল হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন অর্ধেন্দু বসু। প্রথমে বম্বে ডাইংয়ের একজন মডেল হিসেবে লম্বা সফল কেরিয়ার গড়েছিলেন তিনি। এরপর অর্ধেন্দু পা রাখেন বড়পর্দায়। কোবরা, মেরা ইয়ার মেরা দুশমন, বিষকন্যার পাশাপাশি কালকূট নামে একটি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন অর্ধেন্দু। কোবরা ছবির পর থেকে ‘ভারতীয় ব্রুস লি’ এর তকমা পান তিনি।
পাশাপাশি, রাজনীতি নিয়ে গভীর জ্ঞান ছিল অর্ধেন্দুর। ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করতেন তিনি। নেতাজির ভাইপো হিসেবে অত্যন্ত গর্ববোধ করতেন অর্ধেন্দু। নিজের পারিবারিক ঐতিহ্য নিয়ে বরাবরই তাঁর গর্ব ছিল বলে জানান স্ত্রী। তবে ২০১৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে অর্ধেন্দু জানিয়েছিলেন, নেতাজির জন্য তাঁদের পরিবারের উপরেও কম রাজনৈতিক আঁচ আসেনি। প্রথমে ব্রিটিশ এবং তারপর স্বাধীন ভারতেও রাজনীতির নিশানা হয়েছে তাঁদের পরিবার। অর্ধেন্দু ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছোট ভাই শৈলেশ চন্দ্র বসুর পুত্র। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা মা-ও রাজনৈতিক অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন। এমনকি ওই সাক্ষাৎকারে অর্ধেন্দু জানিয়েছিলেন, ১৯৬০-১৯৮০ সালের মধ্যে তাঁর বাবা-মা সন্দেহ করতেন যে, সরকারের তরফ থেকে তাঁদের ফোনে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সে সময়ে তিনি অনেক ছোট। অর্ধেন্দু এর পরবর্তীকালেও নেতাজি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রাপ্য সম্মানের জন্য বহু লড়াই করেছিলেন।