টানা দুটি ম্যাচের হারার পর জয়ের পথে ফিরল টিম ইন্ডিয়া। মঙ্গলবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারালেন হার্দিক পাণ্ডিয়ারা। প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান। জবাবে ভারত ১৭.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। উজ্জ্বল সূর্যকুমার এবং কুলদীপ। একই সঙ্গে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখলেন হার্দিকেরা। এদিন জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারেনি ভারতীয় দল। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অভিষেক ম্যাচে রান পেলেন না যশস্বী জয়সওয়াল (১)। ওবেদ ম্যাকয়ের বলে আউট হলেন তরুণ ওপেনার। আবার ব্যর্থ হলেন শুভমন গিলও। আলজারি জোসেফের বলে আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এল ছয় রান। দুই ওপেনারকে দ্রুত হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক বর্মার জুটির আগ্রাসী ব্যাটিং পাল্টা চাপ তৈরি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের উপর। সাবলীল ব্যাটিং করলেন দু’জনে। রানও তুলছিলেন দ্রুত। ভারতীয় শিবিরকে স্বস্তি দেবে সূর্যকুমারের রানে ফেরা। বেশ কিছু দিন বাদে তাঁকে চেনা ফর্মে দেখা গেল। চাপের মুখে দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেন তিনি। জোসেফের বলে আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪৪ বলে ৮৩ রানের দুরন্ত ইনিংস। ১০টি চার এবং চারটি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে তিলকের সঙ্গে যোগ করলেন ৮৭ রান। সূর্য আউট হওয়ার পর তিলকের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক হার্দিক। এদিনও নজর কাড়লেন তিলক। দু’ম্যাচ আগে অভিষেক হওয়া তরুণ ব্যাটারের কাছ থেকে এল পরিণত ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত রইলেন তিনি।
এরপর জয়ের জন্য দু’রান বাকি থাকতে ছক্কা মেরে খেলা শেষ করে দেন অধিনায়ক হার্দিক। তিলকের ব্যাট থেকে এল চারটি চার এবং একটি ছয়। হার্দিক অপরাজিত থাকলেন ১৫ বলে ২০ রান করে। তিনি মারলেন একটি করে চার এবং ছক্কা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনও বোলারই এ দিন ভারতের ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারেননি। ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন জোসেফ। মঙ্গলবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রভম্যান পাওয়েল। শুরুটা সাবধানে করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং এবং কাইল মেয়ার্স। প্রথম দু’ওভার সাবধানে খেলার পর হাত খোলেন তাঁরা। অষ্টম ওভারে অক্ষর পটেলের বলে মেয়ার্স (২০ বলে ২৫) আউট হওয়ার পর ম্যাচে ফের ভারত। হার্দিকদের লড়াইয়ে ফেরালেন কুলদীপ যাদব। তাঁর স্পিন সামলাতে পারলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজীর ব্যাটারেরা। জনসন চার্লস (১২) আউট হলেন দ্রুত। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা নিকোলাস পুরানও (২০) বড় রান পেলেন না মঙ্গলবার। ১২ বলের ইনিংসে দু’টি চার এবং একটি ছক্কা মেরে আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ফর্মে থাকা ব্যাটার। কিন্তু কুলদীপ তাঁকে আউট করে ভারতীয় শিবিরে স্বস্তি আনেন। পর পর উইকেট হারিয়ে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ওপেনার কিং। তিনি উইকেটের এক দিন আগলে রাখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কুলদীপের স্পিনের পরাস্ত হলেন কিংও (৪২ বলে ৪২)। শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের কোনও ব্যাটারই বড় রান পেলেন না। দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দিলেন অধিনায়ক পাওয়েল। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে। তাঁর ব্যাট থেকে এল একটি চার এবং তিনটি ছয়। একটা সময় মনে হচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ১৫০ রানের গণ্ডি পার করতে পারবে না। কিন্তু শেষ দু’ওভারে ২৯ রান তুলল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলার পেসার মুকেশ কুমারকে এ দিন হার্দিক প্রথম আক্রমণে আনেন ১৮তম ওভারে। প্রথম বলেই তিনি আউট করেন সিমরন হেটমেয়ারকে (৯)। শেষ দিকে সুযোগ পেয়েও ভাল বল করলেন মুকেশ (১৯/১)। ভারতের সফলতম বোলার কুলদীপ। ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। উইকেট পাননি যুজবেন্দ্র চহাল। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন অক্ষর প্যাটেল। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি।