বিজেপিশাসিত মণিপুরে এখনও নেভেনি জাতিদাঙ্গার আগুন। অব্যাহত হিংসার পরিস্থিতি। এবার সেই রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীদের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত হয়েছে। অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করল মণিপুর পুলিশ। অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, তারা মণিপুর পুলিশের ডিউটিতে বাধা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে মণিপুর পুলিশ। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বুধবার সংসদের উভয় কক্ষে বিষয়টি তুলে ধরেন করেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সাংসদরা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার সামাজিক মাধ্যম টুইটারে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে লেখেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে কী ঘটছে? রাজনাথ সিং-এর সেনাবাহিনীর সদর দফতর বিবৃতি দিয়ে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ মণিপুর সরকারের বিরুদ্ধে অসম রাইফেলসকে অপদস্থ করার অভিযোগ এনেছে। যে দপ্তর সরাসরি অমিত শাহ’র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মণিপুর পুলিশ অসম রাইফেলসের নবম ব্যাটেলিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তারা অভিযুক্ত কুকি জঙ্গিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। যাতে তারা নিরাপদ জায়গায় ফিরে যেতে পারে সে কারণে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে তাদেরকেও।
প্রসঙ্গত, গত ৭ই আগস্ট বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, অসম রাইফেলস একপেশে কাজ করে যাচ্ছে। যার জেরে তারা সাধারণ মানুষের রোষের মুখে পড়ছে। সেই মর্মে বিজেপির প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কাছে নরেন্দ্র মোদীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। এমনকী তাঁরা জানিয়েছিলেন, অসম রাইফেলকে স্থায়ীভাবে মণিপুর থেকে সরিয়ে নিতে হবে। এদিকে মায়ানমার সীমান্তে মোতায়েন করা রয়েছে অসম রাইফেলস। সূত্রের খবর, গত ৫ই আগস্ট এই এফআইআর করা হয়েছিল। মণিপুর পুলিশ ও অসম রাইফেলসের মধ্যে দ্বন্দ্ব যখন তুঙ্গে তখনই এই এফআইআর করা হয়েছিল বলে খবর। সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো সামনে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মণিপুরের পুলিশ আধিকারিকরা অসম রাইফেলকে নানাভাবে দোষারোপ করছে। তাদের ডিউটিতে অসম রাইফেলস কেন বাধা দিচ্ছে সেই অভিযোগ তারা তুলেছে বলেও খবর। তবে সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, অসম রাইফেলসের এক অফিসার বলছেন, আমি আমার ডিউটি শুধু পালন করছি। এই পরিস্থিতিতে অসম রাইফেলসের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সেনাবাহিনীর। সংঘর্ষ বিধ্বস্ত মণিপুরে শান্তি ফেরাতে অসম রাইফেলস ও সেনাবাহিনী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অথচ অসম রাইফেলস-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে বলেই অভিযোগ সেনাবাহিনীর। অসম রাইফেলস কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন আধা সামরিক বাহিনী। এদিকে তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছে মণিপুর পুলিশ। এবার এই গৃহযুদ্ধ থামাতে অসম রাইফেলসের ভূমিকা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী। অসম রাইফেলস ও সেনাবাহিনী যৌথ উদ্যোগে মণিপুরের অশান্তি প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, এমনটাই জানিয়েছে সেনাবাহিনী সূত্র।