স্বস্তি পেলেন পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য। স্কুলে নিয়োগ মামলায় সোমবার তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীকে হেফাজতে নিয়েছিল ইডি। সোমবার তাঁকে জামিন দিয়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীকে আর হেফাজতে রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে না আদালত।’’ তবে জামিন পেলেও শর্ত মেনে চলতে হবে শতরূপাকে। আদালত জানিয়েছে, এক লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন পাবেন শতরূপা। আপাতত তিনি রাজ্যের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না। এ ছাড়াও তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে ইডির কাছে। নিয়োগ মামলায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতার করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিকের স্ত্রী শতরূপা এবং তাঁদের পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যকে। দু’জনেরই জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু সম্প্রতি ইডিকে পাল্টা প্রশ্ন করে কলকাতা হাই কোর্ট। ‘‘মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজন কী?’’, জানায় তারা।
প্রসঙ্গত, জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শতরূপা। তাঁর মামলা শুনানির জন্য গত ৪ঠা আগস্ট উঠেছিল বিচারপতি ঘোষের একক বেঞ্চে। গত শুক্রবার সেই মামলারই শুনানিতে হাই কোর্টের বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আদালত জানতে চায়, ‘‘মানিকের স্ত্রীর জামিনের আবেদনে আপত্তি কোথায়?’’ এর পর মামলাটির পরবর্তী শুনানি ছিল সোমবার। শুনানিতে মানিকের স্ত্রীকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেয় আদালত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিকের গ্রেফতারির পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট দিয়েছিল, সেখানেই তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রের নাম ছিল। ইডি সেই সময় আদালতকে জানিয়েছিল, মানিকের কাজ সংক্রান্ত তথ্য জানতেন তাঁর স্ত্রী। দুর্নীতিতে তাঁরও ভূমিকা থাকতে পারে। তা ছাড়া, মৃত এক ব্যক্তির সঙ্গে মানিকের স্ত্রীর যে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে জানিয়ে ইডি জানিয়েছিল, ওই অ্যাকাউন্টে টাকার সঙ্গে দুর্নীতির যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ তাঁদের। তবে এই অভিযোগের পর কেটে গিয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস। সম্প্রতি মানিকের স্ত্রীর জামিনের আবেদনের মামলা বিচারের জন্য ওঠে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ঘোষের বেঞ্চে। সোমবার শর্তসাপেক্ষে মানিকের স্ত্রীকে জামিন দিলেন তিনিই।