রাজ্য সরকারের তৎপরতায় বাংলায় ব্যাপকভাবে বেড়েছে ডিম উৎপাদন। ফলত বিপুল উন্নতিলাভ করেছে ডিমের ব্যবসা। বর্তমানে প্রতি বছরে রাজ্যে ডিমের চাহিদা ১৪০০ কোটি। তার বেশিরভাগটা আমাদের রাজ্যে উৎপাদন হলেও দু’বছর আগেও ভিনরাজ্য থেকে ৪০০ কোটির মতো ডিম আমদানি করতে হত রাজ্যকে। কিন্তু রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় পোলট্রি ব্যবসা এখন অনেকটাই ফুলেফেঁপে উঠেছে। আমদানিকৃত ডিমের পরিমাণ ৪০০ কোটি থেকে কমে এখন ৬৫ কোটি হতে দাঁড়িয়েছে। নবান্নের তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যে যে পরিমাণ ডিমের চাহিদা আগামী বছরের মধ্যেই সেই সংখ্যক ডিম উৎপাদন করে ফেলবেন এ রাজ্যের পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। এমনকী, প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি ডিম উৎপাদন হবে। ২৪-২৫ আর্থিক বছরে তা ভিনরাজ্যে রপ্তানিও করা যাবে বলেই অনুমান করছে রাজ্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সস্তায় পুষ্টিকর খাবার বলতে বাঙালি ডিমকেই বোঝে। ফলত তার চাহিদাও ব্যাপক। আর রাজ্যে মিড-ডে মিল এবং আইসিডিএস সেন্টারগুলোতে ডিমের জোগান দিতে গিয়ে সেই চাহিদা আরও বেড়ে গিয়েছে। ২০২১ সালে রাজ্য সরকার পোলট্রি সেক্টরকে আরও গুরুত্ব দিতে শুরু করে। গ্রামে ঘরে ঘরে সেলফ হেলপ গ্রুপ ডিম উৎপাদন শুরু করে। বাজেট বাড়ে বরাদ্দতেও। ’১৮-’১৯ সালে এই কাজে বরাদ্দ ছিল ৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু ’২৩-’২৪ সালে তা বাড়িয়ে ১১১ কোটি টাকা করা হয়েছে। রাজ্যে পোলট্রি সেক্টরে শেষ দু’বছর ১৪ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এদিকে রাজ্য সরকারের চেষ্টায় ইনসেনটিভ স্কিমের আওতায় ১৫৬টি বেসরকারি পোলট্রি প্রোজেক্ট তৈরি হয়েছে। ১০৭টি থেকে ইতিমধ্যেই ডিম উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে। পাওয়া যাচ্ছে বছরে প্রায় ১৪১ কোটি ডিম। ৪৯টি আরও যে ইউনিট আছে সেগুলো আশা করা যায় এই আর্থিক বছরে শুরু হয়ে যাবে। সেখান থেকে আরও ৮৬ কোটি ডিম মিলবে বলেই জানানো হয়েছে। তিন লক্ষ মুরগি রাখার ক্ষমতাবিশিষ্ট পাঁচটা সরকারি পোলট্রি ফার্ম তৈরি হবে। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ, মালদহের ইংলিশবাজার, পুরুলিয়া, শালবনি, হরিণঘাটাতে এগুলো গড়ে উঠবে। ২০২৩-এর ডিসেম্বর থেকে আরও ৪৬ কোটি ডিম উৎপাদন করতে পারা যাবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্তমানে ডিম উৎপাদনে এখন বাংলা চার নম্বরে। আর খাসির মাংসে এক নম্বর। সব মাংসের মিলিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে রাজ্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২৪-এর মার্চে ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে যাবে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে আর ডিম আনতে হবে না। ২০২৪-২৫ সাল থেকে শুরু হবে ডিম রপ্তানি।