বাংলার রাজ্যপাল হয়ে আসার পর প্রথম কিছুদিন রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু সেসব এখন অতীত। রামনবমী থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর ভূমিকায় ফের রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার যেমন বন্দি মুক্তি নিয়েও বিবাদ শুরুর পথে নবান্ন-রাজভবনের মধ্যে।হাতে মাত্র ১০ দিন। তারপরই স্বাধীনতা দিবস। ফি-বছরই স্বাধীনতা দিবসে কিছু বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, কাদেরকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তাদের তালিকা রাজ্যকে পাঠাতে হয় রাজভবনে।
সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে পাঠানো বন্দিদের সেই তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন রাজ্যপাল। এখনও ফাইলে সই করেননি তিনি। ফলে এবারে স্বাধীনতা দিবসের দিনে সংশ্লিষ্ট বন্দিদের কারাগার মুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। রাজ্য কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘কারাদণ্ডের মেয়াদ, বন্দিদের আচার-আচরণ সহ বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ফি-বছরই স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়া হয় কিছু বন্দিকে। অন্যান্য বছরের মতো এবারেও রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারের বন্দিদের মধ্যে থেকে কিছু বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য কারা দফতর। তবে এক্ষেত্রে রাজভবনের অনুমতি জরুরি।’
রাজ্যে মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে রায়গঞ্জ, লালগোলা, দুর্গাপুর ও মেদিনীপুরে। সেখানে সাজাপ্রাপ্ত আসামীর সংখ্যা কয়েক হাজার। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কিংবা নির্দিষ্ট সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে থেকেই কিছু বন্দিকে ফি-বারই শনাক্ত করেন কারা কর্তারা। আচার-আচরণের আমূল পরিবর্তনের পাশাপাশি বন্দিদের একাংশের বয়স, শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টিও মানবিকতার সঙ্গে বিচার করা হয়। তারই ভিত্তিতে ফি-বারই কিছু বন্দির তালিকা তৈরি করে কারা দফতরের বন্দি মুক্তি কমিটি এবং যে-আদালত সংশ্লিষ্ট বন্দিকে সাজা দিয়েছে, সেখান থেকে অনুমতি মিললে তবেই তার নাম চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়। এরপরই সেই তালিকা পাঠানো হয় রাজভবনে। তবে রাজ্যপাল ওই ফাইলে এখনও সই না করায় নতুন করে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।