ঘড়ির কাটায় রাত ১টা ৪৭ মিনিট। এলাকার অধিকাংশ মানুষ ঘুমিয়ে কাদা। আচমকা শোনা গেল তৃণমূলের স্লোগান। এবং টানা চলল। তত ক্ষণে উৎসাহী মানুষজনের ভিড় জমাতে শুরু করেছে সামনের বড় রাস্তায়। দলীয় অফিসের ভিতরে গিজগিজ করছে মানুষ।
খানিক পরে জানা গেল উপলক্ষটা হল দলে যোগদান। বাম এবং কংগ্রেস ছেড়ে তিন জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য মাঝরাতে যোগ দিলেন তৃণমূলে। বদলে গেল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের সমীকরণ। নিরঙ্কুশ ভাবে কংগ্রেসের দখলে থাকা পঞ্চায়েতে থাবা বসাল তৃণমূল। পঞ্চায়েত গঠনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, তৎপরতা ততই বাড়ছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার মধ্যরাতে বাম এবং কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন জয়ী সদস্য। চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৬৮ নম্বর বুথের আরএসপি সদস্য কাবারুল মণ্ডল, ২৫৬ নম্বর বুথের কংগ্রেস সদস্য আব্দুর রব শেখ এবং বানিরুল মালিত্যা, ২৬২ নম্বর বুথের এক কংগ্রেস সদস্য— এক সঙ্গে দল তৃণমূলে যোগ দেন। আর এর ফলে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে এবং তৃণমূলও এখন সমান ওই পঞ্চায়েতে সমান শক্তিশালী বলে দাবি ঘাসফুল নেতৃত্বের।
২০ আসন বিশিষ্ট চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের দখলে যায় ১১টি আসন। তৃণমূল পেয়েছে ৭টি আসনে। বামফ্রন্টের তরফে আরএসপি প্রার্থীরা ২ আসনে জয়ী হয়। এখন পঞ্চায়েত ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সদস্যদের ধরে রেখে বোর্ড গড়তে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিরোধীদের। এই দলবদলের পর বিরোধীদের অভিযোগ, তাদের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল দাবি করেছে, রাজ্য সরকারের উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগদান করছেন অন্য দলের হয়ে ভোটে জেতা প্রার্থীরা।