বছর ঘুরলেই দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স)। রণকৌশল বুনতেও শুরু করে দিয়েছেন জোটের প্রতিনিধিরা। আগামী বছর লোকসভা ভোটে এই ‘ইন্ডিয়া’র জয় নিয়ে ফের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করলেন জোটের অন্যতম প্রধান মুখ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “ইন্ডিয়াই জিতবে, দেশকে বাঁচাবে।” পাশাপাশি গৈরিকীকরণ নিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন তিনি। গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক, কিন্তু এখন অত্যাচারের প্রতীক হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ তুললেন মমতা। এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় ক্যানসার চিকিৎসার পরিকাঠামো উন্নতিতে একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এছাড়া বাঁকুড়ার একাধিক জায়গায় নতুন দমকল স্টেশন উদ্বোধন করেছেন তিনি। এসবের পরই সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন তাঁকে। ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কটাক্ষ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ইন্ডিয়া জোটের লক্ষ্য দিল্লী। এখন তো এনডিএ’র আর মূল্য নেই দেশে। তাদের যারা শরিক ছিল, তারা অনেকেই বেরিয়ে গিয়েছে। আগামী নির্বাচনে জোটই জিতবে, বাঁচবে দেশ।”
পাশাপাশি, মমতা জানান, “আমাদের এই বিরোধীদের জোট সেই মাতৃভূমির পক্ষে, মাতৃভূমির জন্য। দেশকে বাঁচাতে এই জোট। এখন ভারতের সর্বত্র আমাদের প্রতিনিধি রয়েছেন। হ্যাঁ, দিল্লিই আমাদের লক্ষ্য। আমরাই দিল্লিতে সরকার গঠন করব, তা হবে ভারত সরকার। এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তো। আমাদের জোটের পরের বৈঠকেও আমি যাব। আরও বিস্তারিত কথা হবে।” এরপরই তিনি বিজেপিরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। “ওদের অভিধান সংবিধান নয়, ওদের অভিধান হল সন্ত্রাসের অভিধান। দলিতদের উপর, অত্যাচার সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার। এমন কি সাংবাদিকদেরকেও তাদের ধর্ম জানতে চাওয়া হচ্ছে। এরা মনে করে, হিংসা ছাড়া কোন গতি নেই। ওরা হিংসার আশ্রয় নেবে, আর সব কিছুকে গেরুয়া বানিয়ে দেবে। রং হিসেবে গেরুয়া আমাদের অপছন্দের নয়। গতকাল আমি আলিপুরের ডিজি হেডকোয়ার্টার থেকে ফিরছিলাম। উলটোদিকে একটা পেট্রল পাম্প আছে। দেখছি, দু’জন গলায় কার্ড ঝুলিয়ে গেরুয়া ড্রেস পরে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আমার গাড়িতে থাকা এক পুলিশকে জিজ্ঞেস করলাম যে, তোমাদের ইউনিফর্ম আবার কবে গেরুয়া হল। শুনলাম পুলিশের নয় সমস্ত পেট্রল পাম্পে ইনস্ট্রাকশন গিয়েছে, যারা কাজ করবে তাদের সব গেরুয়া পোশাক পড়তে হবে। বাইপাসের দিকে মেট্রো স্টেশনগুলো দেখে নিন, অর্ধেক গেরুয়া করে দিয়েছে। ৩৬ টি স্টেশন মডার্নাইজেশনের নামে গেরুয়া করার কাজ চলছে। এসব আমার আমলে পাশ হওয়া প্রকল্প। সারা দেশ যদি গেরুয়া হয়ে যায় তাহলে অন্য রং গুলো কোথায় যাবে? গেরুয়া রং পবিত্র রং। ত্যাগের প্রতীক। ত্যাগের প্রতীককে যদি ওরা অত্যাচারের প্রতি হিসেবে ব্যবহার করে তাহলে মানুষ মেনে নেবে না”, পদ্মশিবিরকে কটাক্ষে বিঁধে বক্তব্য তৃণমূল সুপ্রিমোর।