প্রাণে বাঁচতে চাইলে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গুরুগ্রাম ছেড়ে চলে যাও।’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুরুগ্রামের ৭০এ সেক্টরের বস্তিতে কাজের সন্ধানে যাওয়া মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন ভাষায় হুমকি দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী দাঙ্গাকারীরা। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই প্রাণ বাঁচাতে বুধবার গুরুগ্রাম ছেড়ে নিজের রাজ্যে ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ইতিমধ্যেই ১০০ শ্রমিকের মধ্যে গুরুগ্রামের আস্তানা গুটিয়ে নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন অন্তত ৮৫ জন। বাকি ১৫ জনের কাছে ফিরে যাওয়ার মতো পয়সা নেই। তাই আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন।
সোমবার রাতেই গুরুগ্রামের এক মসজিদ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে হিন্দু উগ্রপন্থীরা। মসজিদ ছাড়তে রাজি না হওয়ায় গুলি করে মেরেছে এক ইমামকে। বাদশাপুরে মুসলিমদের মালিকাধীন রেস্তোরাঁ-সহ একাধিক দোকানে আগুন লাগানোর পাশাপাশি লুঠতরাজ চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬০ জনের মতো একটি দাঙ্গাকারী দল গুরুগ্রামের ৭০এ সেক্টরের এক বস্তিতে হানা দেয়। ওই বস্তিতেই আস্তানা গেড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকরা। দাঙ্গাকারীরা গুরুগ্রাম ছাড়ার জন্য ৪৮ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দেয়। ওই সময় পেরিয়ে গেলে কেটে টুকরো করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছে। ওই হুমকির পরে আর বস্তিতে থাকার সাহস দেখাননি মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকরা। সিংহভাগই পাততাড়ি গুটিয়ে গুরুগ্রাম ছেড়েছেন।
হাতে গোনা কয়েকজন রয়ে গিয়েছেন অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে। কেননা ফিরে যাওয়ার মতো অর্থ নেই। এদেরই একজন শামিম হোসেন কান্না জড়ানো গলায় বলেই ফেললেন, গতকাল সন্ধ্যায় ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি মোটরবাইক বাহিনী এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি হুমকি দিয়েছে, মুসলিম শ্রমিকদের বস্তি ছেড়ে চলে যেতে হবে। ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছে। অনেকেই ওই হুমকির পরে পাততাড়ি গুটিয়ে ফিরে গিয়েছেন। আমরা যারা রয়েছি, তাদের ফিরে যাওয়ার মতো অর্থ নেই। সরকার আর প্রশাসনের কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাদের সাহায্য করুন। রক্ষা করুন।’