স্বাধীনতার আগে কলকাতা ও তার আশেপাশের এলাকায় সৈন্যবাহিনীর বারাক, গোলা বারুদ রাখার গুদাম ইত্যাদির জন্য যেই জায়গাগুলি ব্রিটিশ সরকার অধিগ্রহণ করেছিল, আজও তা খাসমহল হিসেবেই সরকারের নথিতে রয়ে গিয়েছে। এবার বাম জমানায় রাজ্য সরকারের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া ২৫ বিঘা খাস জমি উদ্ধারে সক্ষম হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ওই জমির বর্তমান বাজার দর ৫৫ কোটি টাকা।
বাম জমানায় উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়ি ব্লকের রানিগঞ্জ-পানিশালি গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌর সিং মৌজায় থাকা ওই জমিতে স্থানীয়রা ধান চাষ করতেন। বামফ্রন্ট জমানায় জমি মাফিয়ারা কিছু দুর্নীতিবাজ সরকারি আধিকারিকদের সহযোগিতায় সেই জমির চরিত্র বদল করে দেয়। খাস জমি থেকে তা রূপান্তরিত করা হয় বাস্তু জমিতে। সেই জমি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি করা হয় প্লট করে। তার জেরে সেখানে গড়ে ওঠে জনবসতিও। এখন সেখানে যেমন প্রচুর একতলা, দুইতলা বা তিন তলার ব্যক্তিগত বাড়ি রয়েছে তেমনি রয়েছে বেশ কিছু আবাসন ও ফ্ল্যাটও।
গত ২ মাস ধরে আরএস ও এলআর ম্যাপ নিয়ে সমীক্ষা চালানোর পর সেই জমিকে ফের খাস তালিকাভুক্ত করেছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। উল্লেখ্য, শিলিগুড়িতে খাসজমি ও নদীর চর দখলের অভিযোগ বহুদিনের। মূল বাম জমানায় এবং যতদিন বামেদের হাতে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ছিল সেই সময়েই এই সব সরকারি খাসজমি হাতবদল হয়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছে কোটি কোটি টাকায়। একবছর আগে মহকুমা পরিষদে ক্ষমতা দখল করে বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে ঝাঁপায় তৃণমূল। কার্যত এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তরফেই গিয়েছিল স্পষ্ট নির্দেশ। সেই নির্দেশ মোতাবেক মাঠে নেমেছিলেন রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। অবশেষে এবার জমি উদ্ধারে সফল হলেন তাঁরা।