কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বহুদিন ধরেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে। বিজেপি শাসিত সেই রাজ্যে কিছুতেই নিভছে না হিংসার আগুন। ইতিমধ্যেই মানুষের প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। গণধর্ষণ, নগ্ন করে ঘোরানোর পাশাপাশি জীবন্ত পুড়িয়ে মারা মত ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে হিংসার আগুন আরও এক ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য হরিয়ানায়। দুই রাজ্যের পরিস্থিতি এক না হলেও পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে সেখানের নুহ, গুরুগ্রামের মতো জায়গায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এরমধ্যেই নুহে একজন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল উন্মত্ত জনতা।
সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে সেই জেলায় একটি ধর্মীয় মিছিল বের হয়েছিল। ওই একই সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জলি জৈনের গাড়ি। ওঁর পাশাপাশি তাঁর তিন বছরের কন্যাসন্তানও তখন গাড়িতেই ছিল। সরকারি আধিকারিকের গাড়ি দেখা মাত্রই তা ঘিরে ধরে সবাই। এরপর তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনওমতে গাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে প্রাণে বাঁচেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট। মঙ্গলবার ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর সিটি নুহ থানার পুলিশ এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, হামলাকারীরা তাঁদের দিকে ঢিল, পাথরও ছোড়ে বলে অভিযোগ।
কোনওরকমে সেখান থেকে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে এসে নুহের পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ওয়ার্কশপে আশ্রয় নেন অঞ্জলিদেবী। অবশেষে কয়েকজন আইনজীবী তাঁদের উদ্ধার করেন। পরে এফআইআরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘ওই উন্মত্ত জনতার দল তাঁদের দিকে ঢিল ছুড়ছিল। কিন্তু তা গায়ে লাগেনি। গাড়ির পিছনের কাছে পাথরের আঘাত রয়েছে।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘আমাদের দেখতে পেয়েই অভিযুক্ত দুষ্কৃতীরা গুলি চালাতে শুরু করে। কোনওরকমে সেসময় আমরা চারজনই গাড়ি ফেলে পালাই। আমি, আমার মেয়ে, গাড়ির চালক ও একজন দেহরক্ষী একটি পুরনো ওয়ার্কশপে গিয়ে লুকিয়েছিলাম। পরে কয়েকজন উকিল আমাদের উদ্ধার করে। মঙ্গলবার গাড়ির খোঁজ করতে গিয়ে শুনি, তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ওই দুষ্কৃতীরা।’