ক্রমশই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ঋণের অঙ্ক। ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকা ধার হিসাবে নিয়ে সময়মতো শোধ করেনি সারা দেশের ৫০টি বড় শিল্প সংস্থা। এর পরিমাণ বেড়ে বর্তমানে ৮৭ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা! বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে দেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভগবৎ করদ লিখিতভাবে এই তথ্য জানিয়েছেন। এই ৫০ সংস্থার মধ্যে শীর্ষ আছে পলাতক শিল্পপতি মেহুল চোকসি একাধিক কোম্পানি। তাঁর গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেড-সহ চারটি কোম্পানির নাম তালিকায় আছে। এরমধ্যে গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেডের অনাদায়ী ঋণের অঙ্ক হল আট হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া এরা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, রেই অ্যাগ্রো লিমিটেড এবং এবিজি শিপইয়ার্ডের বকেয়া ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে পাঁচ হাজার ৭৫০ কোটি, পাঁচ হাজার ১৪৭ কোটি এবং চার হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধের চুক্তি করার অনুমতি ২০০৭ সালেই ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই অর্থ প্রতিমন্ত্রী সংসদে জানান, ব্যাঙ্কগুলি ইতিমধ্যে ১০ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করেছে যা ঋণ বাবদ নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি মেটাচ্ছিল না। তিনি আরও জানান, গত আর্থিক বছরে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৬ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে তা বেড়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, বকেয়া ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলি যে বোঝাপড়াই করুক না কেন তাতে পরিচালন সমিতির অনুমোদন লাগবে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা ম্যানেজিং ডিরেক্টর এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। উল্লেখ্য, সংসদের চলতি অধিবেশনের অচলাবস্থার মধ্যেই প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তিনটি প্রশ্ন আলোচিত হল। গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, সরকার বকেয়া ঋণ আদায়ে ব্যাঙ্কগুলিকে সতর্ক করেছে। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত ঋণ-সহ সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের বকেয়া ঋণ আদায়ে যেন জোরজবরদস্তি না করা হয়। আইনের পথে যেটুকু সম্ভব সেটাই করতে হবে। বকেয়া ফেরাতে শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহ করা যাবে সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের।