কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। বারবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে বাংলা। এ নিয়ে বরাবরই প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া মেটানোর দাবিতে আরও একবার সরব হলেন তিনি। মমতার অভিযোগ, পুরোপুরি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলার স্থানীয় নেতাদের কথায় রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “পারফরম্যান্স যদি ভাল হয়, তাহলে তো তাকে পুরষ্কৃত করা উচিত। কিন্তু ওরা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ওরা গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে।” আজ, বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। “১০০ দিনের কাজে বাংলা পরপর ৫ বার প্রথম হল। তাও এটা বন্ধ করে দেওয়া হলো। ৭ হাজার কোটি টাকা এখনও দিলো না। গ্রামের গরিব লোকগুলো যারা মাথায় করে মাটি ফেলেছে, তাঁদের টাকাও আটকে দিয়েছে। ২০২৩-২৪ এর বাজেট দেখবেন সব রাজ্যের হিসাব দিয়েছে আর বাংলাকে দিয়েছে শূন্য। ১০০ দিনের কাজে এক টাকাও দেয়নি। উত্তরপ্রদেশ যদি পায়, মধ্যপ্রদেশ যদি পায়, ওড়িশা যদি পায়, বাংলা পাবে না কেন? বাংলা কি ছাগলের তৃতীয় ছানা?”, প্রশ্ন মমতার।
এদিন প্রতিটি প্রকল্প ধরে ধরে বাংলার সাফল্য এবং কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন মমতা। তিনি বলেন, “বাংলার বাড়ি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ওরা একা টাকা দেয় না। আমাদেরও ৪০ শতাংশ দিতে হয়। ওরা যে ৬০ শতাংশ দেয়, সেটাও এখান থেকে জিএসটি তুলে নিয়ে যায়। বাংলার টাকা ওরা আটকে দিয়েছে। আজ লক্ষ লক্ষ বাড়ির প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও, আমরা দিতে পারছি না। কারণ ওরা টাকাটা বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও আগামী দিনে আমরা ভাবব, সেটা। গ্রামীণ রাস্তা তৈরির টাকা ওরা আটকে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও আমাদের সরকার আগে ১ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা করেছি। আমার ১১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করেছি।” উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছে শাসকদল। সেই অভিযোগেই এবার আর একটু শান দিলেন মমতা। “আমাদের পারফরম্যান্স ভাল। পারফরম্যান্স যদি গুড হয় তাহলে তো তাকে পুরষ্কৃত করা উচিত। কিন্তু ওরা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ওরা গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। এসব দেখার জন্য ৭০-৮০টি দল পাঠিয়েছে। বলে না যারে দেখতে নারি তাঁর চলন বাঁকা। ওই সব টিম যা যা জানতে চেয়েছে, যা যা ক্লারিফিকেশন চেয়েছে, সব আমরা জবাব দিয়েছি। সব তথ্য দিয়েছি। তা সত্ত্বেও যেহেতু এখানকার লোকাল নেতারা বারণ করেছে তাই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে টাকা আটকে রেখেছে”, স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।