একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বঙ্গ বিজেপিতে অব্যাহত শনির দশা। একের পর পর ভোটে ভরাডুবি, সাংগঠনিক দুর্বলতা, নেতা-মন্ত্রীদের দলত্যাগ মাথাব্যথা বাড়িয়েছে পদ্মশিবিরের। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলও একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। গ্রাম-বাংলার ভোটের পর বাংলায় বিজেপির অবস্থা আরও শোচনীয়। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ বিজেপির উপর খাপ্পা দিল্লীর নেতারা। পঞ্চায়েতের এহেন হতশ্রী ফলাফলের পর, ফের ব্যর্থতার দায় এড়াতে নালিশ জানানোর হাতিয়ারকেই বেছে নিয়েছিল সুকান্ত, শুভেন্দুরা। দিল্লীর সাফ বার্তা, সব বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুখ চেয়ে থাকা নয়। নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেদেরই। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ঘন ঘন নালিশ জানানো চলবে না। ব্যর্থতার দায়ভার নিতে হবে। পঞ্চায়েতে পরাজয়ের কারণ হিসেবে, সন্ত্রাসের যে তত্ত্ব খাড়া করেছিল বঙ্গ বিজেপি। তাতে দিল্লির নেতাদের চিঁড়ে ভেজেনি। উল্টে, বঙ্গ বিজেপির জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা তৈরির পথে এগোচ্ছে দিল্লীর গেরুয়া-নেতৃত্ব।
পাশাপাশি, বিজেপির অন্দরে খবর, কিছু হল কী হল না; বঙ্গ বিজেপির একাংশের নেতারা দিল্লী নেতৃত্বের দ্বারস্থ হচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে চিঠি লেখা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, বিজেপির দিল্লীর নেতারা এই ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়াকে ভালভাবে নিচ্ছেন না। তাঁরা মত, প্রোটোকল মেনে যেটুকু জানানোর, কেন্দ্রীয়স্তরকে সেটুকুই জানান হোক। ছোটখাটো সমস্যা রাজ্য নেতারাই মেটাক। আর আট-ন-মাস পরই চব্বিশের লোকসভা ভোট। বাংলা থেকে ৩৫টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে বঙ্গের গেরুয়া নেতাদের। তবে বাংলায় আদৌ দুই অঙ্কে পৌঁছতে পারবে বিজেপি? দলের অন্দরমহলেই ঘনীভূত সংশয়।