একদিকে ২৬। অন্যদিকে ৩৮। খালি চোখে দেখলে মনে হতেই পারে পাল্লা ভারী ৩৮’র। কিন্তু তলে গিয়ে খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, পাল্লা ভারী ২৬’রই। আর তাই প্রশ্ন উঠেছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই, সাইনবোর্ড সর্বস্ব দলের সঙ্গে জোট গড়ে কী লাভ হবে? এদের সঙ্গে জোট করে কত শতাংশ বাড়তি ভোট পাওয়া যাবে? এরা নিজেরা ডুবে বসে আছে বা ডুবতে বসেছে, এরা এখন নিজেরা বাঁচার জন্য খড়কুটোর মতো জোটকে আঁকড়ে ধরেছে, এরা কী অ্যাডভান্টেজ দেবে? এদের হাত ধরে বা এদের জোটে টেনে এনে কী আদৌ ২৪’র ভোট বৈতরণী পার হওয়া যাবে? এত শত প্রশ্ন উঠেছে গেরুয়ার অন্দরে। প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরে। প্রশ্ন উঠেছে সঙ্ঘের অন্দরেও।
২৪’র ভোটে বিজেপি তথা মোদি বাহিনীকে টক্কর দিতে জন্ম নেওয়া জোট INDIA-তে আছে মোট ২৬টি দল। সেই জায়গায় এই জোটকে টক্কর দিতে বিজেপিএমন কিছু দলকে শরিক হিসাবে টেনেছে যাদের লোকসভায় কোনও সদস্যই নেই। এমন দলের সংখ্যা ২৫টি। সেই জোটে এমন ৮টি দল আছে যাদের লোকসভায় সদস্য সংখ্যা মাত্র ১জন করে। বাকি ৫টি দলের মধ্যে আপনা দলের সাংসদ আছেন মাত্র ২জন। রামবিলাস পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টির সাংসদ সংখ্যা মাত্র ৬। এই দলটিরই অপর শাখা রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টির সাংসদ সংখ্যা ৭। অর্থাৎ দুই দল মিলে গেলে সাংসদ সংখ্যা হয় ১৩। একনাথ শিন্ডে যিনি শিবসেনা ভেঙে দিয়েছেন, তাঁর হাতে আছে ১২জন সাংসদ। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে বিজেপির পাশে থাকছে মাত্র দুটি দল। এক রামবিলাস পাসোয়ানের মিলিত দল এবং দুই একনাথ শিন্ডের শিবসেনা।
কিন্তু প্রাথমিক সমীক্ষা বলছে এই দুই দলই বড় রকমের ধাক্কা খেতে চলেছে নিজ নিজ রাজ্যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, বিজেপির হাতে কী থাকলো? যাদের নিজেদের ক্ষমতা নেই আসন বের করার বা তা বাড়াবার, যাদের নিজেদের অস্তিত্ব আজ প্রশ্নের মুখে, যারা নিজেরা বাঁচতে বিজেপিকে আঁকড়ে ধরছে, তাঁদের সঙ্গে জোট গড়ে বিজেপি কী পাবে? এই প্রশ্ন এখন শুধু যে বিজেপির অন্দরে উঠছে তাই নয়, প্রশ্ন উঠেছে সঙ্ঘের অন্দরেও। কেননা সঙ্ঘ এই জোট গঠনে জড়িয়ে নেই। সেটা অমিত শাহ আর যে পি নাড্ডাই করছেন। এই জোট কীভাবে ৮ দলের হাতে থাকা ১১টি রাজ্যের ২৪৪টি আসনে লড়াই করবে সেটারই কোনও ব্যাখা নেই। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে পদ্মের অন্দরে।