বিজেপিশাসিত মণিপুরে এখনও জ্বলছে জাতিদাঙ্গার আগুন। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সে রাজ্যের বাসিন্দারা। তবুও এহেন পরিস্থিতি নিয়ে নিস্পৃহ মোদী সরকার। তিন দিনের বিদেশ সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশে ফেরার বিমানে ওঠামাত্রই মণিপুর নিয়ে নতুন করে তাঁকে নিন্দায় বিদ্ধ করল কংগ্রেস। তাদের কথায়, মণিপুরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ‘ব্যাখ্যাতীত ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’। এই বাক্য-সহ মণিপুর নিয়ে কংগ্রেস দলীয় বৈঠকে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। শনিবার দুপুরে প্রথমে রাহুল গান্ধী বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের অশান্তি এবং তাঁর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তীব্র আক্রমণ শানান। প্রধানমন্ত্রী তখন ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। বিকালে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার বিমানে ওঠার পর দিল্লীতে দলীয় প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার ছিল মণিপুর হিংসার ৭১তম দিন। এর মধ্যে একদিনের জন্যও প্রধানমন্ত্রী মোদী ওই রাজ্যের জাতিদাঙ্গা নিয় উচ্চবাচ্য করেননি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সে থাকার সময় ইউরোপিয় ইউনিয়নের সংসদে মণিপুর নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে মানবাধিকার হরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি ভারতের শাসক দল বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধেও সরব হয় সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ। যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রক বলেছে, এটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই ব্যাপারে অন্য দেশ বা সংগঠনের নাক গলানো অনুচিত। সপ্তাহখানেক আগে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও মণিপুরে মানবাধিকার হরণ নিয়ে সরব হন। কংগ্রেসের বক্তব্য, মণিপুরে হিংসা থামাতে সরকারের ব্যর্থতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার কারণেই মুখ খোলার সুযোগ পাচ্ছে বিদেশিরা। মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার আগে শুক্রবার রাতে দিল্লীতে কংগ্রেসের সদর দফতরে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সংগঠন সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল। লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক ডাকা হলেও সেখানে মণিপুর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতিরা। সেখানেই গৃহীত হয় উক্ত প্রস্তাব।