গত ২৩ জুন পাটনায় চার ঘণ্টার বৈঠকের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা আগামী লোকসভা ভোটে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ার বার্তা দিয়েছিলেন। সেদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছিলেন, পাটনায় বিরোধীদের আলোচনায় ডাকার ব্যাপারে তিনিই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কারণ, ঐতিহাসিক ভাবে পাটলিপুত্র দেশকে বহুবার পরিবর্তনের পথে নিয়ে গেছে। সোম ও মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে তামাম বিরোধী বৈঠক ডাকা হয়েছে। এবার আয়োজক হল কংগ্রেস। সদ্য কর্ণাটক বিধানসভা ভোটে জিতে আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস কৌশলগত কারণে বেঙ্গালুরুকে বেছে নিয়েছে। সূত্রের সেই বৈঠকের আগেও বিরোধী জোটের জট ছাড়াতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছেন মমতা।
দিল্লিতে প্রশাসনিক ক্ষমতা নিয়ে কেজরিওয়াল সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। কেন্দ্রের হাতে ক্ষমতা রাখতে সংসদে অধ্যাদেশ পেশ করতে চলেছে সরকার। অরবিন্দ কেজরিওয়াল চাইছিলেন কংগ্রেস সংসদে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করুক। কিন্তু অজয় মাকেন-সহ কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা তা চাইছিলেন না। তাঁদের বক্তব্য, কেজরিওয়ালের অনাচার সীমা ছাড়াচ্ছে। অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে আদতে কংগ্রেসের কোনও সুবিধা হবে না। তা কেজরিওয়ালকে আরও রাজনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করবে। ভুলে গেলে চলবে না, কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক ভাঙিয়ে কেজরিওয়ালের উত্থান হয়েছে।
কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়াল শর্ত দিয়েছিলেন, কংগ্রেস অধ্যাদেশের বিরোধিতা না করলে তিনি বেঙ্গালুরুর বৈঠকে যাবেন না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁকে বেঙ্গালুরু বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানালে, স্পষ্ট করে কোনও কথা দেননি কেজরিওয়াল। এই অবস্থায় খাড়গেকে ফোন করেন মমতা। বলেন, কংগ্রেস স্পষ্ট করে অধ্যাদেশের বিরোধিতা করুক। মমতার ফোনের পর কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল ফের অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে স্পষ্ট করে বিবৃতি দেন। তিনি জানান, কংগ্রেস সংসদেও অধ্যাদেশের বিরোধিতা করবে। এর পরই বেঙ্গালুরু বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে আম আদমি পার্টি। যার ফলে ফের একবার বিরোধী জোটের চালিকাশক্তি হয়ে উঠলেন মমতা।