আর বেশি দেরি নেই। শীঘ্রই রাজ্যের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং সরকারি কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে শুরু হতে চলেছে প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) পরিষেবা। এবার তার গাইডলাইন প্রকাশ করা হল। শুক্রবার অর্থ দফতর এবং ই-গভর্নেন্স বিভাগ একযোগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন এই গাইডলাইনের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে স্কুল শিক্ষক এবং সরকারি কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে পিএফ পরিষেবার চালু করতে আলোচনা চালিয়েছিল অর্থ দফতর। নবান্ন সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগেই এই বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল অর্থ দফতর। তবে জুন মাসে যেহেতু রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছিল, তাই রাজ্যের সর্বস্তরে চালু হয়ে গিয়েছিল নির্বাচনী আচরণ বিধি। সেই কারণে নতুন এই ঘোষণা স্থগিত রাখতে হয়েছিল অর্থ দফতরকে। গত বুধবার পঞ্চায়েত ভোটের আদর্শ আচরণ বিধি উঠে যেতেই সরকারি কর্মচারী শিক্ষক, এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য অনলাইন পিএফ পরিষেবার গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্য। নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহ থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কাজ শুরু হবে। শিক্ষক এবং সরকারি কর্মচারীদের অনলাইনে পিএফ পরিষেবা দ্রুত চালু করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ‘ডাইরেক্টরেট অফ পেনশন প্রভিডেন্ট ফান্ডস এন্ড গ্রুপ ইনসিওরেন্স’ (ডিপিপিজি)-কে। এরাই অনলাইনে বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের তথ্য পিএফের জন্য তৈরি পোর্টালে আপলোড করবে। গাইডলাইনে জানানো হয়েছে, বছরের শেষে প্রতিটি শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং সরকারি কর্মচারীদের অ্যাকাউন্টে মোট জমা অর্থের সুদ যথাসময়ে দেওয়া হবে। ‘ট্রেজারি’ এবং ‘পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস’ দফতরের মাধ্যমে কাজগুলি সম্পন্ন করবে ডিপিপিজি।
উল্লেখ্য, ডিপিপিজি যে কাজ করবে তার জন্য দফতর পিছু এক জন করে নোডাল অফিসার থাকবেন। যাঁরা দফতরের সঙ্গে ডিপিপিজির সমন্বয় রক্ষা করে যাবতীয় কাজকর্ম করবেন। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অনলাইন পিএফ অ্যাকাউন্টের অনুমোদনের দায়িত্বে থাকবেন স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা। রাজ্যের স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য যে ‘আইওএসএমএস’ পোর্টালটি রয়েছে, তা থেকে সমস্ত তথ্য ডিপিপিজির পোর্টালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সব সরকারি কর্মীকেই ‘সিস্টেম জেনারেটর অ্যাকাউন্ট নম্বর’ দেওয়া হবে। এই নম্বরটিই আসলে অনলাইন পিএফ অ্যাকাউন্ট নম্বর। প্রত্যেক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং সরকারি কর্মচারীদের ‘লগ ইন আইডি’ দেওয়া হবে। যা দিয়ে তারা নিজেদের পিএফ অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন। সঙ্গে পিএফ অ্যাকাউন্টের বিনিময়ে যদি তাঁরা ঋণ পেতে চান, সে ক্ষেত্রেও এই পথেই তারা আবেদন করতে পারবেন বলে গাইডলাইনে জানানো হয়েছে। আগামী দিনে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের পিএফ পরিষেবা অনলাইনে চালু হলে শিক্ষকদের সমস্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই মিটে যাবে বলে দাবি করেছেন রাজ্য তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার। “রাজ্য সরকার যে শিক্ষা এবং শিক্ষাকর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে, এই পদক্ষেপ তারই প্রমাণ। আশা করব সময় মতো শিক্ষকদের জন্য অনলাইন পিএফ পরিষেবা চালু করে রাজ্য সরকার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য আগামী দিনের পথ সুগম করবেন”, জানিয়েছেন বিজনবাবু।