একুশের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই অব্যাহত বঙ্গ বিজেপির ‘শনির দশা’। একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি, সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিশিষ্ট নেতা-মন্ত্রীদের দলত্যাগ ক্রমশ জর্জরিত করেছে গেরুয়াশিবিরকে। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। শোচনীয় ফলাফল চিন্তায় ফেলেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে তারা বাংলা থেকে ৩৫টি আসন জয়ের লক্ষ্য স্থির করেছিল তারা। কিন্তু পঞ্চায়েতের মার্কশিট কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে সেই আশায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বাংলায় ১৮টি আসনে জয়লাভ করেছিল গেরুয়াশিবির। তারপর থেকেই এরাজ্যে ক্রমশ মুখ থুবড়ে পড়েছে তারা। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে ওই ১৮টি আসন ধরে রাখা নিয়েই প্রবল সন্দিহান বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এই মুহূর্তে যদি ভোট হয়, তাহলে ১৮ তো দূরঅস্ত, বাংলায় আদৌ দু’অঙ্কে পৌঁছতে পারবে বিজেপি? প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, দলের কোনও সাংসদের এলাকাতেই বিজেপি দাগ কাটতে পারেনি। মন্দের ভাল জগন্নাথ সরকার এবং সৌমিত্র খাঁ। তাঁদের দু’টি আসন যথাক্রমে রানাঘাট এবং বিষ্ণুপুরে বিজেপি খানিকটা মুখরক্ষা করেছে। খুব খারাপ ফলাফলের তালিকায় রয়েছে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্র। নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা, শান্তনু ঠাকুর, সুভাষ সরকারের কেন্দ্রেও ফলাফল রীতিমতো উদ্বেগজনক। ফলত বাংলার নেতারা ইতিমধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তোপের মুখে পড়েছেন। তাই লোকসভা ভোট নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি অবলম্বন করতে চাইছে বিজেপির উপরমহল। সূত্রের দাবি, আগে জেতা আসনের জয় নিশ্চিত করে তারপর বাকি সব কিছু ভাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বঙ্গ নেতাদের। অর্থাৎ, অমিত শাহের ৩৫ আসন দখলের স্বপ্ন যে ফের ছারখার হতে চলেছে, সে ইঙ্গিত পরিষ্কার রাজনৈতিক মহলে।